শনিবার, ১৮ মে ২০২৪ ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
Smoking
 
শিশু দুটির নাম রাখা হয়েছে রাবেয়া ও রোকাইয়া
প্রকাশ: ১০:১৬ am ৩০-০৭-২০১৭ হালনাগাদ: ১০:২৪ am ৩০-০৭-২০১৭
 
 
 


আকবর রাব্বীঃ মেয়ে শিশু দুটির নাম রাখা হয়েছে রাবেয়া ও রোকাইয়া।পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলায় থেকে ঢাকায় এসেছে বাবা গ্রামের স্কুল শিক্ষক রফিকুল ইসলাম ও মাতা তাসলিমা খাতুন।বর্তমানে শিশু দুটি আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু ওয়ার্ডে।


ছবিঃ শামীম আহম্মেদ
পরিবারে একটি শিশু’র স্বাভাবিক জন্ম ভীষণ আনন্দের ব্যাপার। ঐশ্বরিক এই অতিথিকে পেয়ে তার আত্মীয়-স্বজন ও শুভাকাঙ্খীরা খুশিতে আত্মহারা হয়ে ওঠে। কিন্তু সেই শিশুটি যদি অস্বাভাবিকভাবে জন্ম নেয় তাহলে ঐ পরিবার ও আত্মীয়দের দুশ্চিন্তার শেষ থাকে না। পাবনার চাটমোহরে জোড়ামাথার দু’জন কন্যা শিশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে তার পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের আটলংকা গ্রামের স্কুল শিক্ষক রফিকুল ইসলাম-তাসলিমা দম্পতির পরিবারে । গত বছর শিক্ষক রফিকুল ইসলামের স্ত্রী তাসলিমার প্রসব বেদনা নিয়ে পাবনা শহরের একটি ক্লিনিকে ভর্তি হলে সেখানে সিজার করে জমজ মেয়ে শিশুর জন্ম হয়। কিন্তু এই জমজ শিশুর জন্মের আনন্দ নিরানন্দে পরিণত হয় তখনই, যখন কিনা দেখা যায় মেয়ে দুটির মাথা এক সাথে লাগানো। পরিবার থেকে মেয়ে শিশু দুটির নাম রাখা হয়েছে রাবেয়া ও রোকাইয়া। প্রথম দিকে এই শিক্ষক দম্পতি শিশু দুটির মাথা জোড়া লাগানো অবস্থায় জন্ম গ্রহনের কারনে একটু মন খারাপ করলেও পরবর্তী সময় থেকে এখন পর্যন্ত তারা অত্যন্ত আদর ভালবাসাতেই তাদের প্রতি পালন করছেন। বাবা-মায়ের শুধু এখন একটাই চিন্তা কবে তাদের এই সন্তান দুটির মাথা অপারেশন করে আলাদা করা যাবে। কোথায় চিকিৎসার মাধ্যমে অপারেশন করালে মেয়ে দুটিকে আলাদা করাতে পারবেন-এ নিয়ে এখন যেন তাদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই। গত কয়েকদিন আগে সরেজমিন ঐ পরিবারের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বিছানার উপড় শিশু রাবেয়া ও রোকাইয়া মনের আনন্দে খেলনা হাতে নিয়ে শুয়ে খেলা করছে। দারুন উৎফুল্ল ও চঞ্চল শিশু দুটির মা তাদের জন্য খাবার তৈরি করছেন। চলতি মাসের ১৬ তারিখে তাদের বয়স হবে এক বছর। অনেক কিছুই তারা বুঝতে ও দেখতে শিখেছে। বাবা মাকে দেখেই কোলে উঠতে ব্যাকুল হয়ে পড়ে শিশু দু’টি। ইতিমধ্যে মেয়ে দুটিকে আলাদা করনের উদ্দেশ্যে চিকিৎসার জন্য ঢাকা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তার ডা. রুহুল আমিনের শরণাপন্ন হয়েছিলো পরিবারটি। তিনি জানিয়েছেন, বয়স কম হওয়ায় অপারেশনের মাধ্যমে শিশু দুটিকে আলাদা করনের প্রক্রিয়া অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ। শিশু দুটির পিতা স্কুল শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের এই বাচ্চা দুটিকে নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় রয়েছি। কোথায় কিভাবে এদের চিকিৎসা করাবো তার সঠিক কোন দিক নির্দেশনা আমরা পাচ্ছি না। দেশে অথবা বিদেশে চিকিৎসার জন্য কেউ যদি তথ্য দিয়ে কিংবা সাধ্য অনুযায়ী সহযোগীতা করতেন আমরা অনেক উপকৃত হতাম। বাচ্চা দুটি কবে নাগাদ আলাদা করা সম্ভব হবে সেই দিনটির অপেক্ষায় রয়েছি। শিশু দুটির মা তাসলিমা খাতুন বলেন, স্কুলে শিক্ষকতা করে বাচ্চা দুটিকে খাওয়ানো, গোছল করানো, ঘুম পাড়ানোর কাজ করা বেশ কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়েছে। বাচ্চা দুটির সু-চিকিৎসার মাধ্যমে অপারেশন করে আলাদা করনের জন্য সরকার এবং সমাজের বিত্তবানদের তিনি সহযোগীতা কামনা করেছেন।


ছবিঃ শামীম আহম্মেদ
এ ব্যাপারে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. স. ম. বায়েজেদুল ইসলাম বলেন, জন্মগত ত্রুটির কারণে জোড়া মাথার যমজ শিশুর জন্ম হয়। ভালভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষায়র পর বোঝা যাবে তাদের মাথা আলাদা করা যাবে কিনা। তিনি বলেন, অপারেশনের মাধ্যমে শিশু দু’টিকে আলাদা করা ব্যয়বহুল ও ঝুঁকিপূর্ন।

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT