শনিবার, ০৪ মে ২০২৪ ২১শে বৈশাখ ১৪৩১
Smoking
 
ঘুরে আসুন বান্দরবনের চিংড়ি ঝর্ণায়
প্রকাশ: ০১:৪৬ pm ১২-০২-২০১৭ হালনাগাদ: ০১:৫২ pm ১২-০২-২০১৭
 
 
 


চট্টগ্রাম থেকে ৯২ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে পাহাড়ী শহর বান্দরবান। বান্দরবান জেলা হচ্ছে চট্টগ্রাম বিভাগে। এর আয়তন ৪৪৭৯ বর্গ কিলোমিটার। প্রাকৃতিক সৌর্ন্দয্যের অবারিত সবুজের সমারোহ এবং মেঘে ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছে যার আছে সে বাংলাদেশের পাহাড়ী কন্যা বান্দরবান ঘুরে আসতে পারেন।

প্রকৃতির পাহাড়-ঝরণা-ছড়া-মেঘ-কুয়াশা-নদী আর রহস্যময় পাহাড় ঘেরা দীঘির অপার সৌন্দর্যের বান্দরবানের বগালেক, কেওক্রাডাং আর জাদিপাই ঝরণায়। মাঝে পেয়ে যাই এই চিংড়ি ঝরণা! তবে এখানে আজ চিংড়ি ঝরণার কথাই বলব, পরের পোস্ট-এ জাদিপাই/যাদিপাই নিয়ে লিখব।

চিংড়ি ঝরণাটা বান্দারবানের বগালেকের পরেই। আবার অনেকে কেওক্রাডাং থেকে বগালেকে আসার পথে দেখে আসতে পারেন।

সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১২১৬ হাজার ফুট উঁচু পাহাড়ে প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্ট বগালেক। কেওকারাডাং এর কোল ঘেঁষে বান্দারবান শহর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে এবং রুমা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান। পাহাড়ের উপরে প্রায় ১৫ একর জায়গা জুড়ে এই লেকের অবস্থান। এ পানি দেখতে প্রায় নীল রঙের। এ লেকের পাশে বাস করে পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র উপজাতীয় বম ও খুমী সম্প্রদায়। অদ্ভুদ সুন্দর এই নীল রঙ্গের লেকের সঠিক গভীরতা বের করা যায়নি। স্থানীয়ভাবে দুইশ’ থেকে আড়াইশ’ ফুট বলা হলেও সোনার মেশিনে ১৫১ ফুট পর্যন্ত গভীরতা পাওয়া গেছে। এটি সম্পূর্ণ আবদ্ধ একটি লেক। এর আশেপাশে পানির কোন উৎসও নেই। তবে বগালেক যে উচ্চতায় অবস্থিত তা থেকে ১৫৩ মিটার নিচে একটি ছোট ঝর্ণার উৎস আছে যা বগাছড়া (জ্বালা-মুখ) নামে পরিচিত। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে লেকের পানি প্রতি বছর এপ্রিল থেকে মে মাসে ঘোলাটে হয়ে যায়।

এছাড়া, পথের মাঝে রুমা বাজারের আগে একবার ট্রাভেলার ফরম ফিল আপ করাতে হবে, তার আগে বান্দরবন টাউন থেকে বের হয়েই আরেক দফা ট্রাভেলার ফরম ফিল আপ। মাথায় রাখতে হবে বিকাল ৪ টার মাঝেই রুমা যেতে হবে নইলে সেদিন আর বগালেকে যেতে দিবে না আর্মি। আর বগা সেদিন দেখতে না পারা মানে আপনি চিংড়ির ফলস মিস করছেন।বগালেক হয়ে কেও-এর পথে হাটছিলাম এর মাঝেই পড়ে চিংড়ি।

চিংড়ি নিয়ে কিছু বলা দরকার এবার-

চিংড়ি ঝরণা

বান্দরবান মানেই পাহাড়ের দেশ, বান্দরবান মানেই সবুজের দেশ, বান্দরবান মানেই ঝর্ণার দেশ। আর ঝর্ণা শব্দটাই কেমন যেন রিনিঝিনি ছন্দময় আনন্দময় আবহ জাগায় শরীর ও মনে। ইচ্ছে হয় ওর পানির সৌন্দর্য্য আর শীতলতায় ধুয়ে ফেলি জীবনের সব কালিমা। বগালেক থেকে কেওকারাডাং এর পথে ঘন্টাখানেকের পাহাড়ি পথ পাড়ি দিলেই এই চমৎকার ঝর্ণাটা পাবেন, কিন্তু প্রাথমিকভাবে যেটুকু ঝর্ণা দেখা যায় এটুকুই কিন্তু চিংড়ি ঝর্ণা নয়। আসল টুকু দেখতে হলে আপনাকে বিশাল বিশাল পিচ্ছিল পাথরগুলো পেরিয়ে আর একটু ভেতরে ঢুকে ডান দিকে ৯০ ডিগ্রি ঘুরতে হবে । দেখবেন অসাধারণ একটি ঝর্ণা, যেন বাশ বাগানের মাথার অনেক উপর থেকে একেবেঁকে নেমে আসছে চমৎকার একটা স্রোতধারা।

কিভাবে যাবেন বান্দরবন

ঢাকা থেকে বান্দারবান সরাসরি বাসে যাওয়া যাবে- হানিফ, শ্যামলি, এস. আলম

চট্রগ্রাম থেকে যেতে চাইলে বদ্দারহাট টারমিনাল থেকে পুরবী, পুরবানীতে যেতে পারেন।

ঢাকা থেকে সরাসরি বান্দরবান রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। ঢাকা থেকে প্রথমে চট্টগ্রাম তারপর সেখান থেকে পূরবী বা পূবার্নী বাসযোগ সরাসরি বান্দরবান যাওয়া যায়।

ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে চলাচলকারী ট্রেনসমূহ:
-মহানগর প্রভাতী
-তূর্ণা নিশীথা

ঢাকা থেকে ট্রেনে বা বাসে প্রথমে চট্টগ্রাম তারপর চট্টগ্রাম থেকে সোজা বান্দরবান; অথবা ডাইরেক্ট বান্দরবান যাওয়া যায়।

রুটঃ

১. বান্দারবান-চান্দের গাড়িতে/৪ হুইল জিপে করে রুমা বাজার আসতে হবে-নাম এন্ট্রি করে আবার রুমা থেকে বগালেকের ঢালে নামাই দিবে, মনে রাখা ভাল রুমা বাজার থেকে বিকাল ৪টার আগেই নাম এন্ট্রি করাতে হবে আর্মি ক্যাম্প-এ। আর্মিদের কাছে রুমা বাজারে আর বগালেকে নিজের নাম এন্ট্রি, বাপের নাম, মোবাইল নাম্বার, ঢাকার ঠিকানা ফরমে এন্ট্রি করতে টাইম লাগে, যদি ঢাকা থেকেই সেটা পূরন করে নিয়ে যান তাহলে টাইম বেচে যাবে। 

২. বগালেকের ১১৭৬ ফুট উঠার পর আবারও নাম এন্ট্রি করাতে হবে আর্মি ক্যাম্প-এ, এবার খাওয়া দাওয়া শেষে আবার ট্রেক্কিং করতে হবে, আধা ঘন্টা থেকে এক ঘন্টা হাটলেই এই চিংড়ি ঝরণা পাওয়া যাবে।

কই থাকবেনঃ

১. বগালেকে থাকতে পারেন-বগালেকে থাকলে রাতের বেলার শিরাম মজা পাইবেন। যারা কেও যাবেন তারা সেইদিনই চাইলে কেও চলে যেতে পারেন, চিংড়ি থেকে কেও যেতে ২/৩ ঘন্টা লাগবে।

২. রুমা বাজার ফিরে যেতে পারেন যদি হাতে সময় থাকে, রুমায় এসি হোটেল আছে।

রাত্রি যাপনের জন্য বগালেকে জেলা পরিষদের অর্থায়নে একটি রেষ্টহাউস নির্মান করা হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় বম উপজাতী সম্প্রসাদায় কিছু ঘর ভাড়ায় দিয়ে থাকে । বগালেকের পাড়েই বসবাসরত বম সম্প্রদায় পর্যটকদের জন্য রান্না-বান্নার ব্যবস্থা করে থাকে । রুমা বাজার থেকে প্রয়োজনীয় শুকনো খাবার ক্রয় করে নেওয়াই শ্রেয়। উল্লেখ্য যে, নিরাপত্তার জন্য রুমা ও বগালেক সেনা ক্যাম্পে পর্যটকদের রিপোর্টে করতে হয়। স্থানীয় গাইড ছাড়া পায়ে হেটে রুমা থেকে অন্য কোন পর্যটন কেন্দ্রে যাওয়া উচিত নয়।

কি খাবেনঃ

রুমা বাজার থেকে ডাল ভাত সবই পাবেন, বগালেকে গেলেও ডাল ভাত পাবেন, কিন্তু একটু আলাদা পাহাড়ী টেস্ট পাইবেন।

বান্দরবন সিটিতে কোথায় থাকবেন তার হোটেল লিস্টি দিয়ে দিলাম কিছু-

হোটেল ফোর স্টার : (বান্দরবান সদর)
Phone: 0361-63566, 0361-62466, 01813278731, 01553421089

হোটেল থ্রী স্টার : এটি বান্দরবান বাস স্টপের পাশে অবস্থিত। নীলগিরির গাড়ী এই হোটেলের সামনে থেকে ছাড়া হয়। এটি ৮/১০ জন থাকতে পারে ৪ বেডের এমন একটি ফ্ল্যাট।  বুকিং ফোন: থ্রী স্টার এবং ফোর ষ্টার হোটেল মালিক একজন, মানিক চৌধুরী-০১৫৫৩৪২১০৮৯।

হোটেল প্লাজা বান্দরবান: (সদর) Hotel Plaza Bandarban
Booking Phone: 0361-63252

হোটেল গ্রিন হিলঃ (বান্দরবান সদর) Hotel Green Hill
Phone: 0361-62514, Cell: 01820400877

হোটেল হিল বার্ড (বান্দরবান সদর) Hotel Hill Bird
Phone: 0361-62441, Cell: 01823346382

হোটেল পূরবী (বান্দরবান সদর) Hotel Purobi
Phone: 0361-62531, Cell: 0155 6742434

 

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT