রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ১৫ই বৈশাখ ১৪৩১
Smoking
 
প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার দেখে আসুন
প্রকাশ: ০১:০৮ pm ২৮-০২-২০১৮ হালনাগাদ: ০১:৪২ pm ২৮-০২-২০১৮
 
 
 


বর্তমানে ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার বা সোমপুর বিহার বা সোমপুর মহাবিহার । জানা যায়, পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদেব অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন। ১৮৭৯ সালে স্যার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন। ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা দেয়। পাহাড়পুরকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বৌদ্ধবিহার বলা যেতে পারে। নগর জীবনের বাইরে কিছুটা সময় কাঁটাতে হলে আপনি সহজেই ঘুরে আসতে পারেন পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে।

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের ইতিহাস

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার ৩০০ বছর ধরে বৌদ্ধদের অতি বিখ্যাত ধর্মচর্চা কেন্দ্র ছিল। শুধু উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকেই নয়, চীন, তিব্বত, মায়ানমার (তদানীন্তন ব্রহ্মদেশ), মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি দেশের বৌদ্ধরা এখানে ধর্মচর্চা ও ধর্মজ্ঞান অর্জন করতে আসতেন। খ্রিস্টীয় দশম শতকে বিহারের আচার্য ছিলে অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান। ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে স্যার আলেকজান্ডার কানিংহাম এই বিশাল স্থাপনা আবিষ্কার করেন। পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নে অবস্থিত। জয়পুরহাট শহর থেকে প্রায় ১০ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিম এবং জামালগঞ্জ রেল স্টেশন থেকে প্রায় ৪কিলোমিটার পশ্চিমে নওগাঁ জেলার অন্তর্গত পাহাড়পুর গ্রামে অবস্থিত। পাহাড়পুরের ইতিহাস যারা জানেন না, তারা হয়তো ভাবতে পারেন না জানি পাহাড়পুরে কত শত পাহাড় বিদ্যমান। কিন্তু তা নয়। পাহাড়পুরে কোনো পাহাড় নেই। এখানে রয়েছে নানা ধ্বংসাবশেষের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন একটি ভগ্ন মন্দির। এই মন্দিরের চূড়া যুগের আবর্তনে ভেঙ্গে পড়ে তার উপরে ঘাস জন্মে ক্রমে ক্রমে জঙ্গলাকীর্ণ হয়ে শেষে তার উপরে একটি বিরাট বটগাছের ছায়া বিস্তার করেছিল। ফলে মানুষ ভাবত এটা পাহাড়। আর তাই এককালে মানুষ এই স্থানের নাম দিয়েছিল পাহাড়পুর। বলা অত্যুক্তি নয়, পাহাড়পুরের এই ভগ্ন মন্দিরের জন্যই পাহাড়পুর বিখ্যাত।

যেসব দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন?

মূল গেট দিয়ে প্রবেশ করতে সামনে পাবেন জাদুঘর। জাদুঘর থেকে মন্দিরে যেতে খানিকটা হাঁটতে হবে আপনাকে। স্থাপনা এলাকায় প্রবেশ করতেই চোখ ধাঁধানোর দৃশ্য। সোনালি ইটের ওপর রোদের আলো ঝলমল করছে। প্রবেশমুখ থেকে মূল মন্দিরে যেতে পথের দুই পাশে দেশি ফুলের বাগান আপনাকে মোহিত করবে, যা পুরাকীর্তিটির সৌন্দর্য বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশাল এলাকাজুড়ে পুরোনো দিনের ছোট ছোট ইট দিয়ে নির্মিত প্রশস্ত দেয়াল। তিন-চার মিনিট হেঁটে পৌঁছাতে পারেন আপনি মূল মন্দিরে। মন্দিরের গায়ে অসংখ্য প্রাণীর ছবি আঁকা। প্রাচীন মিসরীয় ভাষা হায়ারোগ্লিফের মতো। মন্দিরটি অনেক পুরোনো হওয়ায় ভেতরে প্রবেশের রাস্তাগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। পুরো মন্দির এলাকা ঘুরতে দুই ঘণ্টার মতো সময় লাগবে আপনার।

যেভাবে যাবেন পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে - 

দেশের যেকোনো প্রান্ত হতে নওগাঁ শহরে এসে নওগাঁ বালুডাংগা বাস টার্মিনাল হতে সরাসরি বাসযোগে ঐতিহাসিক পাহাড়পুরে যাওয়া যায়। আনুমানিক দূরত্ব আনুমানিক ৩২ কিলোমিটার এবং বাসভাড়া- ৩০- ৪০ টাকা। অথবা দেশের যেকোন প্রান্ত হতে জয়পুরহাট শহরে এসে বাস অথবা অটোরিকশা নিয়ে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার চলে আসতে পারবেন। জয়পুরহাট হতে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের দূরত্ব মাত্র ১৩ কিলোমিটার। ট্রেন যোগে জয়পুরহাটের জামালঞ্জ স্টেশনে নামলে এখান হতে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে আসতে চাইলে আপনাকে ভ্যান অথবা অটোরিকশা নিতে হবে। জামালগঞ্জ হতে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের দূরত্ব মাত্র পাঁচ কিলোমিটার।

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT