সোমবার, ২০ মে ২০২৪ ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
Smoking
 
চাঁদপুরে সোনালী ব্যাংকের কোটি টাকা নিয়ে ব্যবসায়ী উধাও
প্রকাশ: ০৯:৪৬ am ০৬-০৭-২০১৭ হালনাগাদ: ০৯:৫১ am ০৬-০৭-২০১৭
 
 
 


চাঁদপুর শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মেসার্স সী ফুড করপোরেশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহিদুর রহমান চৌধুরী সোনালী ব্যাংক লিমিটেড চাঁদপুর শাখার প্রায় সিকি কোটি টাকা নিয়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন। দীর্ঘদিন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করে ব্যর্থ হওয়ায় তার সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। ১৯৮৫ সাল থেকে তিনি দফায় দফায় সোনালী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন। সবশেষ ২০১০ সালে ২২ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে লাপাত্তা হওয়ার পরিকল্পনা আঁটেন। ২০১৫ সালে শেষবারের মতো ঋণ নবায়ন করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। গত ৩১ মার্চ ২০১৭ তারিখে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, আরোপিত ও অনারোপিত সুদসহ ব্যাংক পাওনা আছে ৩১ কোটি ৩৯ লাখ ৪২ হাজার ৬৮২ টাকা ৪২ পয়সা। যদিও নিলাম বিজ্ঞপ্তির অনুকূলে কেউ কোনো দরপত্র জমা দেয়নি। এর অন্যতম কারণ হিসেবে অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। মূলত সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সহযোগিতায় মেসার্স সী ফুড করপোরেশন লিমিটেডের বিপরীতে অন্তত পাঁচগুণ বেশি অর্থ লোন নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এদের মধ্যে অগ্রগণ্য হলেন সোনালী ব্যাংকের ২০১০ সালের ম্যানেজার আলী আহম্মেদ মিজি। যিনি বর্তমানে অবসরে আছেন। আর ঋণ কর্মকর্তা আবুল কালাম বর্তমানে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের গাজীপুর শাখা ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। মূলত তাদের পার্সেন্টেজ সুবিধা ও দূরদর্শিতার অভাবেই সরকারি ২২ কোটি টাকা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। অথচ ঋণের বিপরীতে দেওয়া বন্ধকীকৃত সম্পত্তির মূল্য ৫ কোটি টাকা হবে না। এ ছাড়া শাহিদুর রহমান চৌধুরী আত্মাগোপনে যাওয়ার আগে শহরের মিশন রোডস্থ নিজস্ব বাড়ি বিক্রি করে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, মেসার্স সী ফুড করপোরেশন লিমিটেডের শেয়ারও বিক্রি করে দেন সঞ্জয় কুমার রায় নামে এক ব্যবসায়ীর কাছে। যিনি এখন মালিকানা জটিলতায় পড়ে প্রতিষ্ঠানটি নিজের করে নিতে পারছেন না। ১৯ মে ২০১৭ তারিখে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত নিলাম বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, মেসার্স সী ফুড করপোরেশন লিমিটেডের হিমাগারে বিভিন্ন গ্রেডের হিমায়িত গলদা চিংড়ি আছে ২০ হাজার ৬৭৬ কেজি, বাগদা চিংড়ি আছে ৬ হাজার ৫০১ কেজি, দুটি রেফ্রিজারেটর, কাভার্ড ভ্যান, চান্দিনা ভিটি হালে ফ্যাক্টরি আঙিনা একুনে পৌনে ৮৬ শতাংশ ভূমি ও তদস্থিত দালান-গৃহাদি স্থাপিত যাবতীয় কলকব্জা, যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ ও আসবাবপত্র ইত্যাদি সম্পত্তি রয়েছে। গত ১৪ জুন ২০১৭ টেন্ডার বক্স খোলা হলেও কোনো দরপত্র পড়েনি। দ্বিতীয় দফায় নিলাম বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলেও ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে। এ ব্যাপারে সোনালী ব্যাংকের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার আবদুল মতিন বলেন, ব্যাংক তার সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করে মামলা প্রক্রিয়ায় যাবে। তার আগে নিলাম সম্পন্ন প্রক্রিয়া চলছে। আমরা যেকোনোভাবেই হোক ব্যাংকের টাকা উদ্ধারে চেষ্টা চলাব। সোনালী ব্যাংক চাঁদপুর শাখার ডিজিএম দেলোয়ার হোসেন আব্বাসী জানান, ঋণের টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত আছেন কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দিয়ে কয়েক দফায় তদন্তও করা হয়েছে।

 

 

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT