শনিবার, ১৮ মে ২০২৪ ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
Smoking
 
কৃষকদের জন্য সম্ভাবনাময় ‘এ-কার্ড’
প্রকাশ: ০৫:৩০ pm ১৮-১২-২০১৬ হালনাগাদ: ০৫:৩২ pm ১৮-১২-২০১৬
 
 
 


বাংলাদেশের কৃষকদের জন্য অপার সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে ‘এ-কার্ড’। প্রকল্পটি পরিচালিত হচ্ছে ‘ইউএসএআইডি’র কৃষি সম্প্রসারণ সহযোগিতা কার্যক্রমের (এগ্রিকালচার এক্সটেনশন সার্পোট অ্যাক্টিভিটি- এইএসএ) আওতায়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে ‘এ-কার্ড’।

কৃষকরা খুব সহজ শর্তে এই কার্ড নিয়ে খুচরা কৃষিপণ্য বিক্রেতাদের কাছ থেকে কিনতে পারবেন প্রয়োজনীয় কৃষি উপকরণ। যেমন বীজ, সার, কীটনাশক, জ্বালানি ইত্যাদি। এ জন্য তাদের দেওয়া হবে ১০ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত কৃষি ঋণ। এই ঋণের টাকা পরিশোধ করতে হবে ১০ শতাংশ সুদ হারে ছয় মাসের মধ্যে। ব্যাংকের মাধ্যমে কৃষি ঋণ পরিশোধের পর এই কার্ড দিয়ে কৃষকরা পুনরায় ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত কৃষি ঋণ নিতে পারবেন। ফলে চাষের আগে কৃষি উপকরণ কেনা নিয়ে সাধারণ কৃষকদের আর আগের মতন দুশ্চিন্তা করতে হবে না।

প্রকল্পের সংগঠকরা জানালেন, তাদের ‘এ-কার্ডের’ সুদের হার অন্যান্য বেসরকারি সাহায্য সংস্থা (এনজিও) গুলোর তুলনায় অনেক কম। এ ক্ষেত্রে ঋণ বিতরণকারী অন্যান্য এনজিওরা ২৭ শতাংশ পর্যন্ত সুদ নিয়ে থাকে।

ইতোমধ্যে ফরিদপুর সদর উপজেলায় ৩০০ কৃষকদের মাঝে ‘এ-কার্ড’ বিতরণ করা হয়েছে। সম্প্রতি এ নিয়ে কথা হয় প্রকল্পের ক্ষুদ্র ঋণ সমন্বয়ক কর্মকর্তা মো. আকলাছুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানালেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই অনেক কৃষককে তারা এই সহায়তা দিতে পারবেন।

এ নিয়ে ‘ইউএসএআইডি’র এগ্রিকালচার এক্সটেনশন সার্পোট অ্যাক্টিভিটি প্রকল্পের ঢাকা অফিসে কথা হয় ‘এ-কার্ড’ মডেলের উদ্ভাবক ও মূল পরিকল্পনাকারী, চিফ অব পার্টি (সিওপি) বিদ্যুৎ কুমার মহলদারের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে পাইলট প্রকল্পে ‘এ-কার্ডের’ কার্যক্রম সফল হলে এটি ক্ষুদ্র ঋণ আকারে পর্যায়ক্রমে সারা দেশে বাস্তবায়িত হবে। তিনি আরও আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, ২০২১ সালের মধ্যে ৫০,০০০ হাজার ক্ষুদ্র কৃষক ‘এ-কার্ডের’ দ্বারা কৃষি ঋণ গ্রহণ করে উপকৃত হবে। তিনি আরো বলেন, ইউএসএআইডির এগ্রো ইনপুটস প্রকল্পের আওতাধীন কৃষিপণ্য বিক্রেতার মাধ্যমে চাষের মৌসুমে কৃষকরা মানসম্মত কৃষি উপকরণ সঠিক বাজার দরে কিনতে পারবেন।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানালেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রথমে কৃষক, কৃষিপণ্য এবং কৃষি উপকরণ বিক্রেতাদের তালিকা তৈরি করা হয়। প্রকল্পের কৃষকদের নিয়ে গঠন করা হয় ‘কৃষি উত্পাদক দল।’ দলের প্রত্যেক সদস্যকে ব্যাংক এশিয়া একটি করে ‘ডেবিট কার্ড’ বিতরণ করে। যে কার্ডের মাধ্যমে ক্ষুদ্র কৃষকেরা উল্লিখিত হারে কৃষি ঋণ নিতে পারে। এ কার্যক্রমের আওতায় কৃষি উত্পাদক দলকে দেওয়া হয়ে থাকে বিশেষ প্রশিক্ষণ। এতে করে তারা ছয়টি নির্ধারিত কৃষিপণ্য উত্পাদন ছাড়াও অন্যান্য কৃষিপণ্য উত্পাদনে আরও যত্নবান হবেন। এ প্রক্রিয়ায় কৃষিপণ্য সরবরাহকারীদেরকেও এ কাজে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে কৃষকদের উত্পাদিত পণ্য বাজারজাত করতে বিভিন্ন পর্যায়ে ক্রেতাদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে কৃষি উত্পাদক দলের দলনেতাগণ সহযোগিতা করে থাকেন। কৃষি উপকরণ সরবরাহকারীদের এ কাজে সম্পৃক্ত করায় এ ঋণের টাকা দিয়ে কৃষি উপকরণ কেনা ছাড়া অন্য কোনো খাতে তা ব্যয় করা সম্ভব হয় না।

জানা গেছে, পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশের মধ্য ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ১২টি জেলায় (বরিশাল, ঢাকা এবং খুলনা বিভাগ) প্রায় লক্ষাধিক কৃষককে এ উদ্যোগের আওতায় আনা হবে।

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT