সোমবার, ২০ মে ২০২৪ ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
Smoking
 
আরও একটি সঞ্চালন লাইন নির্মাণের উদ্যোগ
প্রকাশ: ০৯:৫৩ am ৩০-০৭-২০১৭ হালনাগাদ: ০৯:৫৬ am ৩০-০৭-২০১৭
 
 
 


ভারত থেকে ১০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করতে আরও একটি সঞ্চালন লাইন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ভেড়ামারা (বাংলাদেশ)-বহরমপুর (ভারত) দ্বিতীয় ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইনটির (বাংলাদেশ অংশ) কাজ এ বছরই শুরু করে আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যেই সম্পন্ন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বাস্তবায়নকারী সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) লিমিটেড ১৮৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে এ সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করবে। পিজিসিবি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। অন্যদিকে পরিকল্পনা কমিশন বলছে, ২০১০ সালের বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী ভারত থেকে ৩ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ আমদানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কোন স্থান দিয়ে কত মেগাওয়াট বিদ্যুত্ আমদানি হবে তার পরিকল্পনা আগে নির্ধারণ করা ছিল। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া যায়নি। ১০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ আমদানিতে ভিন্ন ভিন্ন সঞ্চালন লাইন নির্মাণ হচ্ছে। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনা করে একটি সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমেই একই পরিমাণ বিদ্যুত্ আমদানি করা সম্ভব হতো। এজন্য প্রকল্পের ব্যয় হ্রাস পাওয়াসহ জমির অপচয় রোধ করাও সম্ভব হতো। ২০১৬ সালের ১৩ জুলাই ঢাকায় অনুষ্ঠিত ১১তম জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ (জেডব্লিউজি) বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। ওই সময় বাংলাদেশে (ভেড়ামারা)-ভারত (বহরমপুর) দ্বিতীয় ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইন নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। এ দ্বিতীয় সঞ্চালন লাইন নির্মাণে দুই দেশের যৌথ কারিগরি দল (জেটিটি) সম্ভাব্যতা জরিপও করে ২০১৬ সালে। জরিপে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও বতর্মানে আগামী জুনের মধ্যেই এ কাজ শেষ করতে চায় পিজিসিবি। প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, বর্তমানে ভেড়ামারা ৫০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি হাইভোল্টেজ ডাইরেক্ট কারেন্ট (এইচভিডিসি) ব্যাক টু ব্যাক স্টেশন আছে। এছাড়াও ভেড়ামারা থেকে বহরমপুর পর্যন্ত ৪০০ কেভি একটি ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বৈদ্যুতিক গ্রিডের একটি আন্তঃসংযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ এ আন্তঃসংযোগের মাধ্যমে ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ আমদানি করছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ (ভেড়ামারা)-ভারত (বহরমপুর) বিদ্যামান গ্রিড আন্তঃসংযোগ ক্ষমতা বর্ধিতকরণ (৫০০ মেগাওয়াট) শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এর ফলে ভেড়ামারা এইচভিডিসি ব্যাক টু ব্যাক স্টেশন উপকেন্দ্রটি ৫০০ মেগাওয়াট থেকে ১০০০ মেগাওয়াটে উন্নীত হচ্ছে। এই ১০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুেকন্দ্র ভেড়ামারা-বহরমপুর বিদ্যমান ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে নির্ভরযোগ্যভাবে আমদানি করা যাবে না। এ কারণে দ্বিতীয় ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় ভেড়ামারা ৪০০/২৩০ কেভি উপকেন্দ্রে দুটি ৪০০ কেভি বে-সম্প্রসারণ করা হবে। সঠিক পরিকল্পনার অভাবে সরকারের অর্থের অপচয় : ভারত থেকে বিদ্যুত্ আমদানি করতে ইতোমধ্যে নতুন সঞ্চালন লাইনের প্রকল্পের প্রকল্প প্রস্তাব পর্যাচলোচনা করেছে পরিকল্পনা কমিশন। ডিপিপি পর্যালোচনা করে পরিকল্পনা কমিশন বলছে, ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ আমদানির জন্য ইতোপূর্বে বাস্তবায়িত একটি প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ (ভেড়ামারা)-ভারত (বহরমপুর) ৩০ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন ও উপকেন্দ্রে নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে ওই লাইনের মাধ্যমে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ আমদানি হচ্ছে। এর অতিরিক্ত ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্সহ মোট ১০০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুত্ আমদানির সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভেড়ামারা-বহরমপুর বিদ্যমান গ্রিড আন্তঃসংযোগের ক্ষমতা বর্ধিতকরণ (৫০০ মেগাওয়াট) শীর্ষক প্রকল্পটি ১৮৮ কোটি টাকা ব্যয়ে চলমান রয়েছে। এ প্রকল্প ২০১৫ সালে শুরু হয়েছে যা শেষ হবে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলেও ওই ১০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ আমদানি করা যাবে না বলে ডিপিপিতে বলা হয়েছে। এখন ১০০০ মেগাওয়াট আমদানির জন্য নতুন করে ২৮ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইনসহ উপকেন্দ্রটি নির্মাণের নতুন এ প্রকল্পটির প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে নতুন ২৮ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন স্থাপন করা হবে। এতে জমির প্রয়োজন হবে। অথচ প্রথম প্রকল্পটির আওতায় ৩০ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইনে ১০০০ মেগাওয়াটের সংস্থান রাখা হলে দ্বিতীয় লাইনটি স্থাপনের প্রয়োজন হতো না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুম আল বেরুনী জানান, দ্বিতীয় ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইন নির্মাণে প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। কমিশনের যাচাই-বাছাই শেষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদন পাওয়া যাবে। একনেকে অনুমোদন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যাতে কাজ শুরু করা যায় সে লক্ষ্য নিয়ে পিজিসিবি এরই মধ্যে দরপত্র আহ্বান করেছে। তিনি আরও জানান, বর্তমানে বিদ্যমান সঞ্চালন লাইন রয়েছে তা ব্যবহার করে ১০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ আমদানি করা সম্ভব। তবে কোনো কারণে বিদ্যমান লাইনে সমস্যা হলে যাতে ১০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ আমদানিতে সমস্যা না হয় সেজন্য নতুন লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। অর্থায়ন সঙ্কট : বছরভিত্তিক ব্যয় পরিকল্পনা ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সরকারি তহবিল থেকে ১৭৪ কোটি ৪ লাখ টাকা ও সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৮ কোটি ২২ লাখ টাকাসহ মোট ১৮২ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু চলতি অর্থবছরে এডিপিতে বিদ্যুত্ বিভাগের আওতায় থোক বরাদ্দ রয়েছে মাত্র ৮ কোটি টাকা। এ অবস্থায় ১৮২ কোটি টাকা জোগান দেওয়ার বিষয়ে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় সিদ্ধান্ত হবে। আগামী ৯ আগস্ট প্রস্তাবিত প্রকল্পের ওপর পিইসির সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT