শনিবার, ১৮ মে ২০২৪ ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
Smoking
 
সোনা আমদানিকে আইনি স্বীকৃতি দেব-অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত
প্রকাশ: ০৪:২৩ pm ২২-০২-২০১৭ হালনাগাদ: ০৪:২৭ pm ২২-০২-২০১৭
 
 
 


মানুষ লুকিয়ে অবৈধভাবে যে সোনা আমদানি করে, তা আসলে কালো সোনা, ঠিক অবৈধভাবে অর্জিত কালোটাকার মতো। বাংলাদেশ ও ভারতে বিপুল সোনার চাহিদার একটা বড় অংশ পূরণ করছে এই কালো সোনাই।
ব্যবসায়ীরা খোলাখুলিই বলছেন, অবৈধভাবে বাংলাদেশে যে সোনা আসে তার কিছু অংশ দেশের বাজারে যুক্ত হয়, বাকিটা চলে যায় ভারতে। চাহিদা অনেক বেশি হলেও বৈধ পথে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে দেশে এক রত্তি সোনাও আমদানি হয় না। দোষ কি ব্যবসায়ীদের? না। ব্যবস্থাটিই এমন যে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সোনা আমদানি সম্ভব নয়। ফলে বিদেশ থেকে যাত্রীদের আনা সামান্য সোনা এবং কালো সোনা দিয়ে দেশের জুয়েলারি ব্যবসা চলছে। দেশের ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে বৈধ পথে সোনা আমদানির সুযোগ দাবি করছেন।
অবশেষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের একটি উদ্যোগ সোনা আমদানির জট খোলার সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি সোনা আমদানির বিষয়ে তিনটি প্রস্তাব দিয়ে অর্থমন্ত্রীকে একটি চিঠি দিয়েছে। জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, তিনি এ বিষয়ে খোলাখুলি আলোচনা করতে চান। তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে দেওয়া এক চিঠিতে বলেন, ‘সোনা বাস্তবে নানাভাবে এ দেশে আসে এবং ব্যাপকভাবে তা ভারতে পাচার হয়। এই ব্যবস্থা থেকে আমরা পরিত্রাণ পেতে চাই। আমি ভাবছিলাম যে বাস্তবতা স্বীকার করে আমরা সোনা আমদানিকে আইনি স্বীকৃতি দেব।’ এতে সোনা আমদানির সুযোগ তৈরির আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।
জুয়েলার্স সমিতি অর্থমন্ত্রীকে চিঠিটি দিয়েছিল গত ২৬ জানুয়ারি। তাদের প্রথম প্রস্তাব হলো, শিল্পের ক্ষেত্রে প্রতি ভরিতে ১ হাজার টাকা শুল্ক দিয়ে ও সাধারণ ব্যবসায়ীর ক্ষেত্রে ২ হাজার টাকা শুল্ক দিয়ে কমপক্ষে ১০ কেজি পরিমাণ স্বর্ণবার আমদানির সুযোগ দেওয়া। দ্বিতীয় প্রস্তাব হলো, ঋণপত্র বা লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খুলে সোনা আমদানির সুযোগ দেওয়া। তৃতীয় প্রস্তাব, রপ্তানিমুখী স্বর্ণশিল্প স্থাপনে সহায়তা প্রদান।
জানতে চাইলে জুয়েলার্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগারওয়ালা  বলেন, বর্তমানে সোনা আমদানি নিষিদ্ধ নয়। সরকার একে আমদানিযোগ্য পণ্যের তালিকায় রেখেছে। তবে সমস্যা হলো, সোনা আমদানিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হয়। এ অনুমোদন প্রক্রিয়া এত জটিল যে কারও পক্ষে আমদানি সম্ভব নয়।
আমদানি সম্ভব না হওয়ায় দেশে বৈধভাবে নতুন সোনা আনা যায় কেবল যাত্রী (অপর্যটক) ব্যাগেজ (আমদানি) বিধিমালার অধীনে। চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার পর ব্যাগেজ বিধিমালা-২০১৬ ঘোষণা করা হয়। এতে কিছুটা বাড়তি সোনা আনার সুযোগ পান যাত্রীরা। আগে বিদেশ থেকে ফেরার সময় তাঁরা ২০০ গ্রাম পর্যন্ত সোনার বার আনতে পারতেন। এখন ২৩৪ গ্রাম পর্যন্ত আনা যায়। তবে প্রতি ভরিতে আগের মতো এখনো ৩ হাজার টাকা কর দিতে হয়।
এর বাইরে নতুন সোনার জোগান আসে অবৈধ পথে। জুয়েলার্স সমিতির সাবেক সভাপতি দিলীপ কুমার রায় বলেন, অবৈধপথে যে সোনা আসে, তার কিছু অংশ বাংলাদেশে থাকে। জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা কোনোভাবেই অবৈধভাবে সোনা আমদানির সঙ্গে জড়িত নন। তবে বদনাম হয় তাঁদের। তিনি বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম বাংলাদেশ ব্যাংক সোনা আমদানি করে আমাদের কাছে বিক্রি করুক।’
এনবিআর চেয়ারম্যানকে দেওয়া চিঠিতে অর্থমন্ত্রী ১৫ জনের একটি তালিকা দিয়েছেন, যাঁদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে তিনি আলোচনা করতে চান। তাঁরা হলেন শিল্পমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর দুজন উপদেষ্টা, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি, উইমেন চেম্বারের সভাপতি, জুয়েলার্স সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রোকেয়া হল ও শামসুন্নাহার হলের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি।
দিলীপ কুমার আগারওয়ালা বলেন, এ বৈঠকটি দ্রুত হওয়া উচিত। কারণ প্রক্রিয়াটি ঠেকিয়ে দিতে একটি স্বার্থান্বেষী মহল কাজ করছে।

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT