শনিবার, ১৮ মে ২০২৪ ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
Smoking
 
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতা স্মারকের বৈঠক
রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণ কমানোর নির্দেশ
প্রকাশ: ০৭:০০ pm ১২-০৯-২০১৭ হালনাগাদ: ১০:১৯ am ১৩-০৯-২০১৭
 
 
 


রাষ্ট্রীয় খাতের চার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৬ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের সাড়ে ২৩ শতাংশ। ঋণ খেলাপিদের থেকে আশানুরূপ হারে আদায় না হওয়ায় ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বেড়েই চলেছে। এমনকি রাষ্ট্রীয় চার বাণিজ্যিক ব্যাংকের শুধু শীর্ষ-২০ খেলাপির কাছে আটকে আছে ৯ হাজার ১০৩ কোটি টাকা, ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের যা প্রায় ৩৪ শতাংশ। ব্যাংকগুলোর সার্বিক সূচকের উন্নয়নে খেলাপি ঋণ কমানোর নির্দেশ দিয়েছেন গভর্নর ফজলে কবির। গতকাল রাষ্ট্রীয় মালিকানার সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের জুন ভিত্তিক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে অনুষ্ঠিত সমঝোতা স্মারক বৈঠকে এসব আলোচনা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে গভর্নরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠত বৈঠকে চার ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান, এসএম মনিরুজ্জামানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে খেলাপি ঋণ আদায় জোরদার ও ঋণের গুণগত মান বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা বলেন, রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর বর্তমান অবস্থানে গভর্নর অসন্তোষ প্রকাশ করেন। গভর্নর বলেন, ঘাটতি পূরণে বারবার সরকারের মূলধনের জোগান দিচ্ছে। সরকারের কাছ থেকে মূলধন না নিয়ে মুনাফা বাড়িয়ে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হবে। এ সময়ে তিনি রাজনৈতিক চাপের মধ্যে ব্যাংকের নিয়মনীতি মেনে চলে কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক রাষ্ট্রীয় খাতের সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের সঙ্গে প্রতিবছর সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করে। এমওইউতে খেলাপি ঋণ আদায়, ঋণ প্রবৃদ্ধি, লোকসানি শাখা, পরিচালন ব্যয়, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়। লক্ষ্যমাত্রার আলোকে অগ্রগতি পর্যালোচনার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে এসব ব্যাংকের এমডিদের নিয়ে বৈঠক করে। বৈঠকে উত্থাপিত তথ্য অনুযায়ী, জুন ’১৭ শেষে রাষ্ট্রীয় মালিকানার চার বাণিজ্যিক ব্যাংকের ১ লাখ ১২ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে খেলাপি ছিল ২৬ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা, মোট ঋণের যা ২৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। এক বছর আগে ব্যাংকগুলোর ১ লাখ ২ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে ২৩ হাজার ৫৬৬ কোটি টাকা বা ২২ দশমিক ৯৮ শতাংশ ছিল খেলাপি। জুনে সোনালী ব্যাংকের ১১ হাজার ৪২১ কোটি টাকা বা ৩৪ দশমিক ৫০ শতাংশ খেলাপি। জনতার ৩৮ হাজার ১০৪ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে ৫ হাজার ৩৪১ কোটি টাকা, অগ্রণীর ২৪ হাজার ৫৩৩ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে ৪ হাজার ৯০৪ কোটি এবং রূপালী ব্যাংকের ২৮ দশমিক ৫০ শতাংশ বা ৪ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা ঋণ খেলাপি। ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের মধ্যে শুধু শীর্ষ-২০ খেলাপির কাছে আটকে আছে ৯ হাজার ১০৩ কোটি টাকা। গত জুনে সোনালী ব্যাংকের শীর্ষ-২০ খেলাপির কাছে পাওনা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা। জনতা ২ হাজার ২১৮ কোটি, অগ্রণী ১ হাজার ১৬৯ কোটি এবং রূপালী ব্যাংকের ২ হাজার ২৩২ কোটি টাকা আটকে আছে। চার ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি মেটাতে বছরের পর বছর ধরে বিপুল অঙ্কের মূলধন জোগান দিয়ে আসছে সরকার। গত চার অর্থবছর এসব ব্যাংকের ৫ হাজার ২১০ কোটি টাকার মূলধন জোগান দেওয়া হয়েছে। এরপরও ব্যাংকগুলোর মধ্যে সোনালীর ২ হাজার ৬১৯ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতি দেখা দিয়েছে। রূপালী ব্যাংকের ঘাটতি রয়েছে ৭৪১ কোটি টাকা। অবশ্য জনতা ব্যাংকের ১৭ কোটি এবং অগ্রণীর ১৯৫ কোটি টাকার মূলধন উদ্বৃত্ত রয়েছে।

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT