বুধবার, ০৮ মে ২০২৪ ২৫শে বৈশাখ ১৪৩১
Smoking
 
রাখাইনে রোহিঙ্গাদের পোড়া জমি দখল নেবে মিয়ানমার সরকার
প্রকাশ: ১০:০০ am ২৮-০৯-২০১৭ হালনাগাদ: ১১:০৬ am ২৮-০৯-২০১৭
 
 
 


মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সহিংসতায় পুড়িয়ে দেওয়া ভূমির দখল মিয়ানমার সরকার নেবে বলে জানিয়েছেন দেশটির একজন মন্ত্রী।

রাখাইনের রাজধানী সিতভিতে মঙ্গলবার এক বৈঠকে সমাজ কল্যাণ, ত্রাণ ও পুনর্বাসনমন্ত্রী উইন মিয়াত আইয়ে বলেন, “আমাদের দেশের আইনানুযায়ী পুড়ে যাওয়া ভূমি সরকারের দখলে চলে যায়। সরকার সেইসব ভূমির পুনঃউন্নয়ন করবে।”

দেশটির সরকারি দৈনিক ‘নিউ লাইট অব মিয়ানমার’ এর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর দিয়েছে।

দেশটিতে প্রচলিত একটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনের বরাত দিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, “ভূমি পুনঃউন্নয়ন কাজ খুবই কার্যকর হবে।”

ওই আইন অনুযায়ী, যে কোনো ধরনের দুর্যোগ এমনকি সংঘর্ষের কারণে কোনো এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হলে সরকার সেই এলাকার পুনঃউন্নয়ন কাজ তদারকি করবে।

তবে মিয়ানমার সরকারের পুনঃউন্নয়ন পরিকল্পনা আসলে কী, সে বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা তিনি দেননি।

সহিংসতা থেকে প্রাণ বাঁচাতে দেশত্যাগ করা রোহিঙ্গা মুসলিমরা যদি দেশে ফিরে যায় তবে তাদের নিজ নিজ গ্রামে প্রবেশ এবং সম্পত্তির দখল নিতে দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়েও কিছু জানাননি তিনি।

রয়টার্সের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে জানতে ওই মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হতে হয়েছে।

গত ২৪ অগাস্ট রাতে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) রাখাইনে ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ঘাঁটিতে হামলা চালালে পুলিশসহ বেশ কয়েকজন নিহত হওয়ার পর থেকে রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।

স্যাটেলাইট ইমেজ বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে প্রায় চারশ’টি রোহিঙ্গা গ্রামের অর্ধেকের বেশি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রাণ বাঁচাতে প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে, যাদের ‍অনেকের শরীরে গুলি বা পোড়া ক্ষত রয়েছে।

পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মুখে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় বৌদ্ধদের নির্মম নির্যাতনের বর্ণনা পাওয়া যাচ্ছে। তারা জানায়, সেখানে তাদের হত্যা, ধর্ষণ ও নিপীড়নের শিকার হতে হচ্ছে। পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে তাদের বাড়িঘর।

স্যাটেলাইট ইমেজেও রোহিঙ্গা গ্রামগুলো জ্বলতে দেখা গেছে।

সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে যে সহিংস নির্যাতন ও নিপীড়ন চালাচ্ছে তাকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ বলে মনে করে জাতিসংঘ।

যদিও মিয়ানমার সরকারের দাবি, এআরএসএ জঙ্গিরা রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে বেসামরিক নাগরিকদের উপর আক্রমণ করছে এবং তাদের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছে। যে কারণে রাখাইনে অর্ধের বেশি রোহিঙ্গা গ্রাম খালি হয়ে গেছে।

২৫ অগাস্ট সেনা অভিযান শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত সহিংসতায় প্রায় পাঁচশ মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে মিয়ানমার সরকার; যাদের মধ্যে প্রায় চারশ’ জনই এআরএসএ জঙ্গি বলে দাবি তাদের।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এ সপ্তাহে মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগ তুলেছে। যদিও ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন দেশটির সরকার।

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT