শনিবার, ১৮ মে ২০২৪ ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
Smoking
 
বেসিক ব্যাংকেরই ৩ হাজার কোটি টাকা
ছয় ব্যাংকের সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার প্রভিশন ঘাটতি
প্রকাশ: ০৯:৩৪ am ২১-০৮-২০১৭ হালনাগাদ: ০৯:৩৬ am ২১-০৮-২০১৭
 
 
 


ব্যাংক ব্যবস্থার খেলাপি ঋণের বিপরীতে নির্ধারিত পরিমাণের অর্থ সংরক্ষণের (প্রভিশন) বিধান রয়েছে। সে অনুসারে জুন ’১৭ শেষে ব্যাংকগুলোর ৪৩ হাজার ৬৪০ কোটি ৭৭ লাখ টাকার প্রভিশন রাখার প্রয়োজন ছিল। তবে ব্যাংকগুলো সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে ৩৭ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা। এতে সামগ্রিক ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।   কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, শুধু বেসিক ব্যাংকেই ৩ হাজার ৮০ কোটি টাকার প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে। এ ছাড়া আগের মতোই রাষ্ট্রীয় খাতের সোনালী ব্যাংকের ২ হাজার ৮০৯ কোটি টাকা এবং রূপালী ব্যাংকের ১ হাজার ৪৭৩ কোটি ৮০ লাখ টাকার প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে। আর বেসরকারি খাতের বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকে ২৬৯ কোটি টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংকে ৭২৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা, প্রিমিয়ার ব্যাংকে ১৭৫ কোটি টাকার প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে। অর্থাত্ ছয় ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৫৩৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, চলতি বছরের জুন শেষে ব্যাংকিং খাতে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৪ হাজার ১৪৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী ব্যাংকের অশ্রেণিকৃত বা নিয়মিত ঋণের বিপরীতে দশমিক ২৫ থেকে ৫ শতাংশ হারে প্রভিশন রাখতে হয়। আর শ্রেণিকৃত ঋণের মধ্যে নিম্নমান বা সাব স্ট্যান্ডার্ড ঋণের বিপরীতে ২০ শতাংশ, ডাউডফুল বা সন্দেহজনক ঋণের বিপরীতে ৫০ শতাংশ এবং মন্দ বা খারাপ ঋণের বিপরীতে ১০০ শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেছেন, গত কয়েক বছরের রাজনৈতিক বিরূপ পরিস্থিতিতে ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা নেমে আসে। এ সময় ব্যবসায়ীরা ঠিকমতো মুনাফা করতে পারেনি। এতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ব্যাংকগুলো কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে মুনাফা করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলশ্রুতিতে কয়েকটি ব্যাংক তাদের ঋণঝুঁকির বিপরীতে প্রয়োজনীয় অর্থ সংরক্ষণ করতে পারেনি। তাছাড়া রাষ্ট্রীয় খাতের বেসিক ও সোনালী ব্যাংকের ঋণ বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম সংঘটিত হয়েছে। এতে ব্যাংক দুটি কাঙ্ক্ষিত পরিমাণের প্রভিশন সংরক্ষণ করতে পারেনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, খেলাপি ঋণ বেশি হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা কমে যায়। আবার খেলাপি ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে আয়ের খাত থেকে অর্থ এনে প্রয়োজনীয় অর্থ সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা লভ্যাংশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ ছাড়া যেসব ব্যাংক প্রভিশন ঘাটতিতে থাকে তাদের মূলধন ঘাটতিতে পড়ার আশঙ্কা  তৈরি হয়, যা আর্থিক ভিত্তির দুর্বলতা প্রকাশ করে। তিনি আরও বলেন, খেলাপি ঋণ বেশি হলে ঋণের সুদহারও বাড়ে। এতে ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তারা নিরুত্সাহিত হন। বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, যা শিল্পের জন্য ভালো সংবাদ নয়।

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT