দেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে পুলিশের আরও একটি অত্যাধুনিক অস্ত্র ও প্রযুক্তি সজ্জিত বিশেষায়িত ইউনিট গঠন করছে সরকার। আগামী ৩ আগস্ট প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায় ‘অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট’ নামের নতুন এ ইউনিটের ৫৮১টি পদ সৃজনের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হবে। পুলিশের একজন অতিরিক্ত মহাপরিদর্শককে প্রধান করে আগামী অক্টোবর মাস নাগাদ এই ইউনিট গঠন করা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এ বিষয়ে সকালের খবরকে বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে সরকার এই বিশেষ ইউনিট গঠন করছে। ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিট কাজ করছে। সঙ্গে এই ইউনিটটিও কাজ করবে। এই ইউনিটের কার্যক্রম সারাদেশেই থাকবে। আমাদের লক্ষ্য সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূল করা। ২০০৯ সাল থেকেই এই ইউনিট গঠনের প্রচেষ্টা চললেও সম্প্রতি সারাদেশে জঙ্গি তত্পরতা বেড়ে যাওয়ায় দ্রুততার সঙ্গে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট গঠনের কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া হয়েছে। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জঙ্গি দমনে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অধীনে ‘কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)’ নামে বিশেষ ইউনিট গঠন করা হয়। দেশের বিভিন্ন এলাকায়ও জঙ্গিবিরোধী বেশ কয়েকটি অভিযানে সফলতা পায় সিটিটিসি। পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (প্রশাসন ও শৃঙ্খলা) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন গতকাল সকালের খবরকে বলেন, নতুন এই ইউনিট আধুনিক বিশ্বের অত্যাধুনিক অস্ত্র ও প্রযুক্তি ব্যবহার করবে। এতে করে বিশেষায়িত হিসেবে গড়ে উঠবে এই ইউনিট, যা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে বিশেষ কার্যকর হবে। নতুন বিশেষায়িত ইউনিট গঠন প্রসঙ্গে পুলিশ সদর দফতরের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বর্তমানে অবয়বহীন এবং প্রযুক্তিসমৃদ্ধ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনের লক্ষ্যে গতানুগতিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনাকে পুনগর্ঠিত করা অতি জরুরি হয়ে পড়েছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গি কার্যক্রম পরিকল্পনা, মদদদাতা এবং বাস্তবায়নকারী অতি সূক্ষ্ম ও সুসমন্বিত পরিকল্পনায় তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন রাষ্ট্রীয়, ধর্মীয় সংস্কৃতি অনুষ্ঠানগুলোর খোলা জায়গায় হাজার হাজার এবং মাঝে মাঝে লাখো মানুষের সমাগম ঘটে। এসব স্থানে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং যেকোনো বিধ্বংসী কার্যক্রম প্রতিহত করার জন্য আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর একটি বিশেষায়িত ইউনিট গঠন করা প্রয়োজন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এই ইউনিট গঠন করা হচ্ছে। পুলিশ সদর দফতরের একটি সূত্র জানায়, অর্থ মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই আর্থিক বিষয়ের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে। এখন প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটি অনুমোদন দিলেই ইউনিট গঠনের কার্যক্রম শুরু হবে। জনবল কাঠামোতে অতিরিক্ত আইজিপি-১, ডিআইজি-১, অতিরিক্ত ডিআইজি-২, পুলিশ সুপার-৫, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার-১০, সহকারী পুলিশ সুপার-১২, ইন্সপেক্টর-৭৫, এসআই-১২৫, এএসআই-১৪০ ও কনস্টেবল-২০০ থাকবেন। প্রস্তাবিত পদগুলো প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনকৃত ৫০ হাজার পদের মধ্যেই রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের জন্য ১০৬টি যানবাহন এবং ১১টি অত্যাধুনিক সরঞ্জামাদি কেনার প্রস্তাব দেওয়া হয়। তার মধ্যে ৪১টি গাড়ি ক্রয় এবং ১১টি সরঞ্জামাদি কেনার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।