শোচনীয় হার কাকে বলে তা এবারের বিপিএলে সিলেট সিক্সার্সকে হাড়ে হাড়ে টের পাইয়িয়ে ছেড়েছে চিটাগং ভাইকিংস। জিম্বাবুয়ের তারকা সিকান্দার রাজার ৯৫ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে ভর করে ২১১ রান তোলে চিটাগং। যা চলতি আসরে সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর। এই স্কোর তাড়া করতে নেমে মুখ থুবড়ে পড়ল নাসির হোসেনের সিলেট সিক্সার্স। বিপিএলের পঞ্চম আসরের চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম দিনে ৪০ রানের বড় জয় নিয়ে নিয়ে মাঠ ছাড়ল মিসবাহ-উল-হকের দল। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ২১২ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে সিলেটকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার আন্দ্রে ফ্লেচার এবং গুনাথিলাকা। ৪ ওভারে ৪৩ রানের ওপেনি জুটি গড়েন তারা। সানজামুলের বলে গুনাথিলাকা (১০) আউট হলে ভাঙে এই জুটি। কিন্তু ঠিকই খুনে ব্যাটিংয়ে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ফ্লেচার। বাবর আজমের সঙ্গে তার জুটিও বেশ জমে উঠে। সৌম্য সরকারের বলে ভ্যান জাইলের কল্যাণে একবার জীবন পান বাবর। সেই ভ্যান জাইলের জোড়া আঘাতেই বড় ধাক্কা খায় সিলেট সিক্সার্স। যার ক্যাচ ছেড়েছিলেন, ৩২ বলে ৪১ রান করা সেই বাবর আজমকেই প্রথমে প্যাভিলিয়নে পাঠান তিনি। দুই বল পরেই সাব্বির রহমানকে (৩) এলবিডাব্লিউ করে দেন তিনি। এরপর জোড়া আঘাতে সিলেটকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন সৌম্য সরকার। ১৬ তম ওভারে দুই বলের ব্যবধানে তুলে নেন ব্রেসনানা (২) এবং আবুল হাসান রাজুর (০) উইকেট। এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি সিলেট। অধিনায়ক নাসির হোসেন ৮ রান করে ফিরেন তাসকিনের বলে। ইনিংসের শেষ বলে নুরুল হাসানের (২৮) উইকেট তুলে নেন তাসকিন। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৭১ রানে থামে সিলেট সিক্সার্স। ৪০ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে চিটাগং ভাইকিংস। এর আগে দিনের দ্বিতীয় খেলায় টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় দলীয় ২৬ রানেই সৌম্য সরকারের (১) উইকেট হারায় চিটাগং ভাইকিংস। সিলেট অধিনায়ক নাসির হোসেনের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন জাতীয় দলের এই তরুণ ওপেনার। এনামুল হক বিজয়ও ব্যর্থ। ব্রেসনানের বলে ফিরেছেন মাত্র ৩ রান করে। অপর ওপেনার লুক রনচি সিলেট বোলারদের তুলোধুনো করে আবুল হাসানের শিকার হওয়ার আগে ২৫ বলে ৬ চার ১ ছক্কায় ৪১ রান করেন। রনচির আউট ছিল সিলেটের দুঃখের শুরু মাত্র! দুই প্রান্ত থেকেই ব্যাটিং তান্ডব শুরু করেন ভ্যান জাইল আর সিকান্দার রাজা। ঝড়ের গতিতে এগিয়ে যেতে থাকে চিটাগংয়ের রান। ২৬ বলে ৪ বাউন্ডারি ২ ওভার বাউন্ডারিতে ৪০ রান করা ভ্যান জাইল থামেন কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে নাসির হোসেনের তালুবন্দি হয়ে। কিন্তু সিকান্দার রাজাকে থামানো যেন কারও সাধ্যে নেই! ৩০ বলে তুলে নিলেন হাফ সেঞ্চুরি। এরপর আরও বিধ্বংসী হয়ে উঠলেন রাজা। কামরুল ইসলাম রাব্বির করা ইনিংসের শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে যখন তিনি থামলেন, তখন আফসোস ছাড়া করার কিছুই ছিল না। ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ধরা পড়লেন নাসির হোসেনের হাতে। রাজার নামের পাশে তখন জ্বলজ্বল করছে ৪৫ বলে ৯ চার ৬ ছক্কায় ৯৫ রান! ৫ রানের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া করার আফসোস! যদিও ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ২১১ রানের পাহাড় গড়ল চিটাগং ভাইকিংস।