সুনামগঞ্জে সকাল থেকে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। একইভাবে বৃষ্টি হয়েছে গতকাল বুধবার রাতেও। এ অবস্থায় আজ বৃহস্পতিবার সকাল আটটা থেকে সুনামগঞ্জ-২ আসনের (দিরাই ও শাল্লা) উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। ভোট গ্রহণ চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত।
নির্বাচনে দুজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়া সেনগুপ্তা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ছায়েদ আলী মাহবুব হোসেন।
সকাল আটটার দিকে দিরাই উপজেলার শরীফপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ভোট গ্রহণের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা সব প্রস্তুতি নিয়ে নিজ নিজ কক্ষে বসে আছেন। তখনো কোনো ভোটার আসেননি। আসেননি প্রার্থীদের এজেন্টরা। মিটিন দশেক পর কয়েকজন ভোটার এলে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা তাপস কুমার রায় এজেন্টদের খুঁজতে থাকেন। কিন্তু তাঁদের দেখা নেই। কিছুক্ষণ পর দুই প্রার্থীর দুজন এজেন্ট এলে তাঁদের একটি কক্ষে নিয়ে সকাল ৮টা ১৬ মিনিটে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। কেন্দ্রের দুই নম্বর কক্ষে প্রথম ভোট দেন শরীফপুর গ্রামের দিলারা বেগম। ভোট দেওয়ার পর তিনি বলেন, ‘সকাল থাকি মেঘ অর। ইলা দিন থাকলে ভোটও মানুষ কম আইবা।’ একই গ্রামের আরজু মিয়া বলেন, তিন দিন ধরে সুনামগঞ্জে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে ভোট গ্রহণের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন, ভোটার সবাইকেই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ভোটার উপস্থিতিও কম হতে পারে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী ছায়েদ আলী মাহবুব হোসেনের এজেন্ট ইউসুফ আলী বলেন, ‘ঘুম থেকে উঠতে দেরি হইছে। এর কারণেই আসতে সময় লাগছে।’
প্রিসাইডিং কর্মকর্তা তাপস কুমার রায় বলেন, তাঁর কেন্দ্রে মোট ভোটার ২ হাজার ২৭৩। বৃষ্টির কারণে শুরুতে ভোটার উপস্থিতি কম হলেও বৃষ্টি থামলে উপস্থিতি বাড়বে।
সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. হারুন অর রশীদ বলেন, ‘নির্বাচনী এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, আনসারের ৩ হাজার ২৫৭ জন সদস্য মোতায়েন আছেন। এর আগে সুনামগঞ্জের কোনো নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এতসংখ্যক সদস্য মোতায়েন হয়নি। আশা করি, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ হবে।’
নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এস এম এজহারুল হক বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সকাল নয়টা পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি।’
দিরাই ও শাল্লা উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৫২ হাজার ৪৩০ জন।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি এই আসনের সাংসদ ও আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হয়। উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্ত্রী জয়া সেনগুপ্তাকে মনোনয়ন দেয়।