সাংবাদিকদের জন্য কোনো বেতন কাঠামোর প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি এই ওয়েজ বোর্ডকে আননেসেসারি (অপ্রয়োজনীয়) বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, বৈঠকে বুঝেছি সরকারি চাকরিজীবীদের তুলনায় সাংবাদিকদের ওয়েজ বোর্ডের বেতন বেশি। কাজেই সাংবাদিকদের জন্য নতুন করে আর বেতন কাঠামোর প্রয়োজন নেই। গতকাল সচিবালয়ে নিউজ পেপারস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) সঙ্গে এক বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, নোয়াবের সভাপতি ও দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, সহ-সভাপতি ও দৈনিক সমকালের প্রকাশক এ. কে. আজাদ, দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম প্রমুখ। নোয়াবের সঙ্গে বৈঠকের পর নবম ওয়েজ বোর্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে সাংবাদিকদের বেতন সরকারি কর্মকর্তাদের চেয়েও ভালো। তাদের জন্য ওয়েজ বোর্ডের কোনো দরকার নেই। তাদের বেতন নির্ধারণ বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, বৈঠকে বুঝেছি সরকারি চাকরিজীবীদের তুলনায় সাংবাদিকদের ওয়েজ বোর্ডের বেতন বেশি। সুতরাং ওয়েজ বোর্ড রাখাটা আননেসেসারি। অর্থমন্ত্রী বলেন, ঢাকা থেকে যত পত্রিকা প্রকাশিত হয়, এর মধ্যে ১৫-২০টি ছাড়া অল আর রাবিশ, বোগাস। এসব পত্রিকার জন্য ওয়েজ বোর্ড ঠিক করব? নো, নট অ্যাট অল। আই উইল ফিক্সড দ্য বেতন স্কেল ফর দিস ফিফটিন অর টুয়েন্টি নিউজ পেপারস, যেখানে মানুষজন কাজ করে এবং এগুলোতে কী স্যালারি স্কেল রয়েছে আমাকে একটা দেন। এ সময় তিনি বলেন, ঢাকা থেকে যে সাড়ে পাঁচশ’র মতো সংবাদপত্র প্রকাশিত হয় তার মধ্যে ১৫-২০টি ছাড়া বাকিগুলো টোটালি ইউজলেস।
নিয়ম-নীতি না মেনে কীভাবে পত্রিকাগুলো চলছে-জানতে চাইলে মুহিত বলেন, কাগজ পায়, এটা পায়, ওটা পায়। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, আপনারা একজন বা দুজন দায়িত্ব নিন, আমাকে আপনাদের পাঁচটি গ্রেডের তথ্য দেন। টেলিভিশনগুলোর কী হবে-এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, সেম, সেম, সেম। কয়েকটি টেলিভিশন মরে যাবে। ইজ ইট ডিজারেবল ফর কান্ট্রি। দুনিয়ার কোনোখানে এত টেলিভিশন চ্যানেল রয়েছে? নতুন নতুন টিভির অনুমোদন তো আপনারাই দিয়েছেন-এমন প্রশ্নের জবাবে মুহিত বলেন, এতগুলো টেলিভিশন স্টেশন আছে এগুলো থাকবে না, অটোমেটিক্যালি কতগুলো মরে যাবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি কতবার বলেছি, এতগুলো ব্যাংক আছে, টেলিভিশন আছে, এর মধ্যে কতগুলো থাকবে না। অটোমেটিক্যালি কতগুলো মরে যাবে যাবে। বেতন কাঠামোর প্রয়োজন নেই-উপস্থিত সাংবাদিকরা অর্থমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের বিরোধিতা করলে তিনি বলেন, এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করছি এবং অত্যন্ত দুঃখজনক তথ্য পাচ্ছি। বিষয়টি নিয়ে পরে সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানান তিনি। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকরা ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), জাতীয় প্রেসক্লাব ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)-এই চার সংগঠনের সভাপতি ও সাংবাদিক সম্পাদকদের সঙ্গে বসার অনুরোধ জানান। উপস্থিত সাংবাদিকদের তীব্র প্রতিবাদের মুখে আগামী ১৭ আগস্ট দুপুর ১২টায় সাংবাদিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বসে বিষয়টি দেখা হবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ওয়েজ বোর্ড হচ্ছে খবরের কাগজের জন্য। ইলেকট্রনিক মিডিয়ার জন্য এখনও পর্যন্ত কোনো আইন তৈরি হয়নি। বৈঠকে গোটা মিডিয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান তিনি।