নিষিদ্ধ নেইমার, বেঞ্চে লুইস সুয়ারেস। আক্রমণভাগে ‘এমএসএন’ ত্রয়ীর মধ্যে ছিলেন কেবল লিওনেল মেসি। পয়েন্ট টেবিলের তলানির দল ওসাসুনাকে উড়িয়ে দিতে এর বেশি কিছু লাগল না বার্সেলোনার।
কাম্প নউয়ে বুধবার রাতে ৭-১ গোলের জয়ে এই রাউন্ডে লা লিগার শীর্ষে থাকা নিশ্চিত করলো লুইস এনরিকের দল।
এক ঘণ্টার মাথায় মাঠ থেকে উঠে যাওয়ার আগে জোড়া গোল করেন মেসি। দুটি করে গোল করেন আন্দ্রে গোমেস আর পাকো আলকাসেরও। অপর গোলটি হাভিয়ের মাসচেরানোর।
শুরু থেকেই ম্যাচে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ রেখে দ্বাদশ মিনিটে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। প্রতিপক্ষের পাস ধরে মাথা আর পায়ের টোকায় বল নিয়ন্ত্রণে রেখে ডি-বক্সের দিকে ছুটে গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে জালে পাঠান মেসি।আগের ম্যাচেই বার্সেলোনার জার্সিতে ৫০০ গোলের মাইলফলকে পৌঁছানো আর্জেন্টিনার ফরোয়ার্ডের এই গোল দর্শকরা উদযাপন করে ১০ নম্বর জার্সি তুলে ধরে; রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে শেষ মুহূর্তে জয়সূচক গোল করে যেভাবে জার্সি উঁচু করে ধরেছিলেন মেসি।
৩০তম মিনিটে ইভান রাকিতিচের ক্রস থেকে দারুণ ভলিতে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন পর্তুগিজ মিডফিল্ডার আন্দ্রে গোমেস।সাত মিনিট পর হাভিয়ের মাসচেরানোর ভাসিয়ে দেওয়া বলে আর্দা তুরান মাথা লাগাতে না পারায় নষ্ট হয় বার্সেলোনার আরেকটি সুযোগ। একটু পর মেসির বাড়ানো বলে আলকাসেরের হেড কোনোমতে ফেরান গোলরক্ষক।
বিরতির পর তৃতীয় মিনিটে দুর্দান্ত ফ্রি-কিকে গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেনকে উল্টো দিকে পাঠিয়ে ব্যবধান কমান রবের্তো তরেস। তবে ঘুরে আর দাঁড়াতে পারেনি দলটি।
দুই মিনিট পর মাসচেরানোর হেড গোলরক্ষক সালভাতোরে সিরিগুর হাতে লেগে পোস্টে লেগে ফিরে।৫৭তম মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোলটি পেয়ে যান গোমেস। কর্নার থেকে বল বুক দিয়ে নামিয়ে পিকের শট পোস্টেরর গোড়ায় লেগে ফিরলে ফিরতি শটে বল জালে পাঠান পর্তুগিজ এই মিডফিল্ডার।
চার মিনিট পর আবার মেসির দুর্দান্ত গোল। ডি-বক্সের খানিকটা বাইরে বল পেয়ে আড়াআড়ি দৌড়ে জায়গা বানিয়ে জোড়ালো শটে জালে জড়ান পাঁচবারের বর্ষসেরা এই ফুটবলার। কিছুই করার ছিল না গোলরক্ষকের।
এবারের লা লিগায় আর্জেন্টিনা অধিনায়কের গোল হলো সর্বোচ্চ ৩৩টি। ২৪টি গোল নিয়ে গোলদাতাদের তালিকায় দুই নম্বরে আছেন সুয়ারেস। ১৯টি গোল নিয়ে এর পরে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো।গোলের একটু পরই সের্হিও বুসকেতসকে অধিনায়কের আর্মব্যান্ড দিয়ে দর্শকদের করতালির মধ্যে মাঠ ছাড়েন মেসি।
স্বাগতিকদের আক্রমণের তোপ তাতে কমেনি। ৬৪তম মিনিটে তুরানের উচু করে বাড়ানো বল ডি-বক্সে পেয়ে কোনাকুনি শটে জালে পাঠান স্পেনের ফরোয়ার্ড আলকাসের।
তিন মিনিট পর পেনাল্টি থেকে বার্সেলোনার জার্সিতে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে প্রথম গোল করেন মাসচেরানো। সেই ২০১০ সাল থেকে তিনশর বেশি ম্যাচ খেলে ফেললেও গোল করা আর হয়ে ওঠেনি আর্জেন্টিনার এই মিডফিল্ডারের।
দেনিস সুয়ারেসকে ডি-বক্সে ফাউল করায় স্পটকিকের বাঁশি বাজিয়েছিলেন রেফারি।
৮৬তম মিনিটে গোলরক্ষককে কাটিয়ে আলকাসেরের দ্বিতীয় গোলে হতাশা আরও বাড়ে ওসাসুনার।
৩৪ ম্যাচে ৭৮ পয়েন্ট বার্সেলোনার। পরের ম্যাচে দেপোর্তিভো লা করুনাকে ৬-২ গোলে হারিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ পয়েন্টে বার্সেলোনার পাশে বসলেও মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে থেকে শীর্ষেই আছে লুইস এনরিকের দল।