আবারও লিওনেল মেসির জাদুকরী ফুটবলের সাক্ষী হলো ফুটবল বিশ্ব। চমৎকার দুটি গোল করলেন, দুটি করালেন। সুন্দর ফুটবলের পসরা মেলে ধরলেন নেইমার-সের্হিও বুসকেতসরাও। তাতে বার্সেলোনা পেল আরেকটি দুর্দান্ত জয়।
শনিবার রাতে কাম্প নউয়ে সেল্তা দে ভিগোর বিপক্ষে লা লিগার ম্যাচটি ৫-০ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা। আগামী বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পিএসজির বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে নামবে কাতালান ক্লাবটি। অসাধারণ এই জয়ে ইতিহাস গড়ার একটা ইঙ্গিতও দিয়ে রাখলো তারা।
এর আগে এইবারের মাঠে সহজ জয়ে লিগ টেবিলের শীর্ষে উঠেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। ঘরের মাঠে এই দাপুটে জয়ে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানেই শীর্ষস্থান পুনরুদ্ধার করলো লুইস এনরিকের দল।
দশম স্থানে থেকে খেলতে নামা সেল্তা ভিগোর বিপক্ষে বার্সেলোনার অন্য তিন গোলদাতা নেইমার, সামুয়েল উমতিতি ও ইভান রাকিতিচ।
ঘরের মাঠে প্রথমার্ধের প্রায় পুরোটা সময় একতরফা আক্রমণ করে যাওয়া বার্সেলোনা ২০তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো। তবে ভাগ্যের ফেরে তা হয়নি; গোলরক্ষককে একা পেয়ে লুইস সুয়ারেসের শট পোস্টে লাগে। ফিরতি বলে মেসির কোনাকুনি শটও পোস্টে লাগলে সে যাত্রায় বেঁচে যায় সেল্তা।
চার মিনিট পর গোলের অপেক্ষার শেষ হয় বার্সেলোনার। মাঝমাঠের কাছ থেকে বল পায়ে ছুটে গতিতে এক জনকে পিছনে ডি-বক্সের বাইরে আরেকজনকে কাটিয়ে নীচু জোরালো শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক।
৪০তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন নেইমার। মেসির বাড়ানো বল গোলমুখে পেয়ে চিপ শটে গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে দেন ব্রাজিলকে রিও অলিম্পিকে সোনা জেতানো এই তারকা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে এক মিনিটের ব্যবধানে দারুণ দুটি আক্রমণ করে স্বাগতিকরা। প্রথমবার সবাইকে পিছনে ফেলে ছুটে যাওয়া সের্জি রবের্তো ঠিক সময়ে শট নিতে ব্যর্থ হন। এরপর ছয় গজ বক্সের বাঁ-দিকে বল পায়ে গোলরক্ষককে একা পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি নেইমার।
তবে মেসির জাদুকরী ফুটবলে সে হতাশা ঢাকতে সময় লাগেনি। সাত মিনিটের মধ্যে আরও তিনবার বল জালে পাঠায় তারা।
৫৭তম মিনিটে দলের তৃতীয় গোলটি দারুণ পাসিং ফুটবলের ফল। নেইমারের পাস ধরে মেসি কোনাকুনি বাড়ান ডি বক্সের মধ্যে রাফিনিয়ার উদ্দেশ্যে। আর ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডারের পা হয়ে বল পেয়ে সহজেই ঠিকানায় পৌঁছে দেন রাকিতিচ।চার মিনিট পর মেসির ছয় গজ বক্সে বাড়ানো বলে টোকা দিয়ে জালে পাঠান উমতিতি। বার্সেলোনার জার্সিতে এই ফরাসি ডিফেন্ডারের এটা প্রথম গোল।
এর তিন মিনিট পর মেসির আনেকটি চমৎকার গোল। বাঁ-দিক থেকে আড়াআড়ি ডি-বক্সে ঢুকে এক জনকে ফাঁকি দিয়ে আরেক জনের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে গোলটি করেন তিনি।
পাঁচবারের বর্ষসেরা ফুটবলারের এবারের লিগে এটা ২৩তম গোল। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৩৭ ম্যাচে ৩৮টি। ১৯ গোল নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে সুয়ারেস।
বাকি সময়ে অনন্য মেসির ফুটবল কারিশমায় আরও বেশ কয়েকটি সুযোগ পেয়েছিল বার্সেলোনা। নির্ধারিত সময় শেষের এক মিনিট আগে যেমন তিন জনের মধ্যে দিয়ে দারুণ ক্ষিপ্রতায় ডি-বক্সে ঢুকে বাইলাইন থেকে উঁচু করে গোলমুখে বল বাড়িয়েছিলেন বিশ্বসেরা তারকা। কিন্তু সুযোগটি হেলায় হারান দেনিস সুয়ারেস।
এই জয়ে ২৬ ম্যাচে বার্সেলোনার পয়েন্ট ৬০।
এইবারের মাঠে ৪-১ গোলে জেতা জিনেদিন জিদানের দল রিয়াল ২৫ ম্যাচে ৫৯ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে।