ইতালির অন্যতম প্রধান শহর ভেনিসে বিজয়ফুল কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করার প্রত্যয় এবং প্রবাসী শিশু-কিশোরদের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধারা জন্য ভেনিস বাংলা স্কুলের আয়োজনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ কর্মসূচির শুরুতেই মিলান বার্তা পত্রিকার সম্পাদক ও ইতালিতে বিজয়ফুল কর্মসূচি শুরু করার প্রধান উদ্যোক্তা নাজমুল হোসেন কর্মসূচির বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ডিসেম্বর আমাদের বিজয়ের মাস, আমাদের চেতনার মাস। এ মাসের ১৬ তারিখে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা চূড়ান্ত বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলেন। আমাদের স্বাধীনতার জন্য প্রায় ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছিলেন। আমরা তাদের স্মরণ করে, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এখন থেকে প্রতি বছর বিজয়ফুল কর্মসূচি পালন করি। আমরা চেষ্টা করি প্রতিটি বাংলাদেশির বুকে একটি করে লাল সবুজের বিজয়ফুল পরিয়ে দিতে। যা আমাদের হৃদয়ের প্রতিটি স্পন্দনের সঙ্গে মিশে থাকবে।
৯ ডিসেম্বর শুক্রবার ভেনিস মেসত্রের একটি হলে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা স্কুলের সভাপতি সৈয়দ কামরুল সরোয়ার। সঞ্চালনা করেন পলাশ রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতি সৈয়দ কামরুল সরোয়ার প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান কবিরের বুকে বিজয়ফুল পরিয়ে দেন। শাহজাহান কবির প্রবাসী ছেলেমেয়েদের কাছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরেন এবং একটি শিশুকে বিজয় ফুল পরিয়ে দেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সেলিম দেওয়ান, ভেনিসের বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহসভাপতি আকতার হোসেন, ভেনিস বাংলা স্কুলের সহসভাপতি মোহাম্মদ আকতার উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, সহসাধারণ সম্পাদিকা রুনু আক্তার ও সোহেলা আক্তার প্রমুখ।
সৈয়দ কামরুল সরোয়ার বলেন, ভেনিস বাংলা স্কুল একটি সামাজিক সংগঠন। আমরা এই সংগঠনের ব্যানারে প্রবাসী ছেলেমেয়েদের বাংলা ভাষা শিক্ষা দিই। বাংলাদেশের সংস্কৃতির শিক্ষা দিই। আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য যেন তারা ভুলে না যায় সে জন্যেই এই সংগঠন কাজ করে। তিনি উপস্থিত সকল প্রবাসীকে ধন্যবাদ জানান। বিশেষ করে ইতালিতে বিজয়ফুল কর্মসূচির প্রধান উদ্যোক্তা নামজুল হোসেনকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে ভেনিস বাংলা স্কুলের শিক্ষার্থীরা জাতীয় সংগীতসহ দেশের গান পরিবেশন করে। কবিতা আবৃত্তি করে কাজী তানজিনা ও সাদিব লিটন। উপস্থিত সবাই পরস্পরকে বিজয়ফুল পরিয়ে দেয়।
নয় মাস যুদ্ধে ঘন সবুজের ওপর রক্তাক্ত দাগ, যা রক্তিম সূর্য হয়ে ফুটে উঠল আমাদের লালসবুজ পতাকায়। পপিফুলের ধারণা থেকে পাঁচটি সবুজ পাপড়ি এক লাল বৃত্তে অর্থাৎ সূর্যটাকে ঘিরে বাংলার সবুজ বনানী ধরা পড়ে আছে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের প্রতীক হিসেবে যার নাম দেওয়া হয়েছে বিজয়ফুল। বিশ্বযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারীদের স্মরণে ব্রিটেনে পপি ফুলের আদলে বিজয়ফুল চালু করার ধারণা মূলত ব্রিটেনপ্রবাসী কবি শামীম আজাদের।