বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না, তা আদালত নির্ধারণ করবেন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের সঙ্গে খালেদা জিয়ার মুক্তির শর্তজুড়ে দিয়ে বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন বানচালের চক্রান্ত করছে।
আজ শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘মিট দ্যা প্রেস’ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী আরো বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে স্বাধীন সাংবাদিকতাবিরোধী কোনো ধারা রাখা হবে না।
এ সময় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, দেশকে এগিয়ে নেওয়ার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে আগামী নির্বাচনে তাঁর দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটে থেকে অংশ নেবে। আর সাংবিধানিক প্রক্রিয়া রক্ষায় যেকোনো মূল্যে ডিসেম্বরে নির্বাচন হতে হবে। তবে খালেদা জিয়ার মুক্তির শর্ত এবং সেনা মোতায়েনের প্রস্তাব দিয়ে বিএনপি-জামায়াত সেই নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ তথ্যমন্ত্রীর।
হাসানুল হক ইনু বলেন, বিএনপি এখনো নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রস্তাব দিতে পারেনি। কারণ তাদের উদ্দেশ্য নির্বাচন নয়। কোনো শর্ত দিয়ে নির্বাচন হয় না। কোনো দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির মুক্তির শর্তে নির্বাচনে অংশগ্রহণ আমরা সায় দেব না। এটা মেনে নিলে অপরাধতত্ত্বকে বৈধতা দেওয়া হয়। এটা গণতন্ত্রের ওপর কুঠারাঘাত।
স্থানীয় নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের প্রচারের সুযোগ প্রসঙ্গে জাসদ সভাপতি বলেন, পৃথিবীর বহু দেশে এমপি-মন্ত্রীরা স্বপদে বহাল থেকে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেওয়ার নজির রয়েছে। বাংলাদেশেও আগে ছিল। তবে কী শর্তে তারা স্থানীয় নির্বাচনের প্রচারে অংশ নিবে তা ইসি ভালো জানে।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, চলতি মাসের মধ্যে গঠিত ওয়েজ বোর্ডের বিপরীতে মহার্ঘ ভাতার প্রজ্ঞাপন জারি হবে। আর ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার কর্মীদের স্তর বিন্যাস ও নীতিমালাসহ কাঠামো সংশ্লিষ্টরা চূড়ান্ত করতে পারলে এই কমিটি তাদের বেতন-কাঠামো করার সুযোগ পাবেন। ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়াকে অন্তর্ভূক্ত করে ১৯৭৪ সালের সংবাদপত্র কর্মচারী চাকরির শর্তাবলী আইন নতুন করে প্রণয়ন করা হবে। এ ছাড়া প্রস্তাবিত তথ্য প্রযুক্তি আইনে সাংবাদিকদের জন্য যেন কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করে সে ব্যাপারে সচেষ্ট থাকবে তথ্য মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে মন্ত্রী আরো বলেন, আইন কোনো সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে প্রণীত নয়। অবাধ ডিজিটাল প্রযুক্তির কারণে রাষ্ট্র ও সমাজ বিব্রত হচ্ছে। অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে ব্যক্তি ও চক্র। জাতির সব দিক নিরাপদ করতেই এ আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। তবে যেসব বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে, তা যাচাই-বাচাই করা হচ্ছে। আমরা এমন কিছু করবো না যাতে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিআরইউ সভাপতি সাইফুল ইসলাম। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শুক্কুর আলী শুভসহ সাংবাদিক নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।