মুশফিকুর রহিমের বরিশাল বুলসকে ২২ রানে হারিয়ে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের খুলনা টাইটানস পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠেছে। ছয় ম্যাচে সর্বোচ্চ ১০ পয়েন্ট খুলনার। সমান ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চার নম্বরে রইলো মুশফিকের বরিশাল।
চলমান বিপিএলের ২০তম ম্যাচে আগে ব্যাট করে খুলনা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে তোলে ১৫১ রান। মুশফিক-শাহরিয়ার নাফিসদের বরিশালের ইনিংস থামে ১২৯ রানের মাথায়। খুলনার হয়ে দারুণ ব্যাটিং করেন
দলপতি মাহমুদউল্লাহ এবং অস্ট্রেলিয়ান ওয়েসেলস। অপরদিকে নাফিস-মুশফিকের ব্যাটেও ছিল রান।
রোববার (২০ নভেম্বর) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দিনের একমাত্র ম্যাচে সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার মুখোমুখি হয় মুশফিকুর রহিমের বরিশাল বুলস আর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের খুলনা টাইটানস। এবারের আসরে এ ম্যাচের মধ্যদিয়েই দু’দল প্রথমবার পরস্পরের মুখোমুখি হয়। ২০তম ম্যাচে মাঠের লড়াইয়ে নামার আগে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বরিশাল দলপতি মুশফিক।
টস হেরে খুলনার হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন আন্দ্রে ফ্লেচার এবং হাসানুজ্জামান। তবে ইনিংসের পঞ্চম ওভারে তাইজুল ইসলাম ফিরিয়ে দেন খুলনার ওপেনার আন্দ্রে ফ্লেচার এবং হাসানুজ্জামানকে। ৪ রান করে আবু হায়দারের তালুবন্দি হন ফ্লেচার আর ১৯ বলে তিনটি চারের সাহায্যে ১৯ রান করে একই ফিল্ডারের হাতে ধরা পড়েন হাসানুজ্জামান। দলীয় ২৪ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে ব্যাট করতে থাকে খুলনা।
দলকে টানতে থাকেন দলপতি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তাইজুলের তৃতীয় শিকারে বিদায় নেন ৪৪ রান করা রিয়াদ। ২৬ বলে দুটি চার আর তিনটি ছক্কায় তিনি তার ইনিংসটি সাজান। দলীয় ৭৭ রানের মাথায় বিদায় নেন রিয়াদ। পরের ওভারেই রান আউট হয়ে ফেরেন শুভাগত হোম।
দলীয় ৭৮ রানে টপঅর্ডারের চার উইকেট তুলে নেয় বরিশাল। চার ব্যাটসম্যানের বিদায় নিলেও অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যান রিকি ওয়েসেলস দলকে টানতে থাকেন। ইনিংসের ১৭তম ওভারে রায়াদ এমরিতের বলে বোল্ড হওয়ার আগে তিনি ২৯ বলে ৪০ রান করেন। তার ইনিংসে ছিল চারটি চার আর একটি ছক্কার মার। পরের ওভারে বিদায় নেন কেভিন কুপার। রুম্মনের বলে উইকেটের পেছনে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হন তিনি। দলীয় ১২৯ রানের মাথায় খুলনা ষষ্ঠ উইকেট হারায়।
এরপরও দলকে টানতে থাকেন আরিফুল হক। ২২ বলে ২৬ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। ইনিংসের শেষ বলে আউট হওয়ার আগে তাইবুর রহমার করেন ১০ রান।
খুলনা টাইটানসের ছুঁড়ে দেওয়া ১৫২ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় মুশফিকুর রহিমের বরিশাল বুলস। দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে ওপেনার ফজলে মাহমুদকে (০) এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন পাকিস্তানি পেসার জুনায়েদ খান। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের শেষ বলে বিদায় নেন জিভান মেন্ডিস। শফিউল ইসলামের বলে কেভিন কুপারের হাতে ধরা পড়ার আগে তিনি ১৬ বলে চারটি বাউন্ডারিতে করেন ২১ রান।
ইনিংসের দশম ওভারে বিদায় নেন শামসুর রহমান শুভ। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের করা ওভারে জুনায়েদ খানের তালুবন্দি হওয়ার আগে শুভর ব্যাট থেকে আসে ১২ রান। দলীয় ৪৫ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় বরিশাল। এরপর জুটি গড়েন শাহরিয়ার নাফিস এবং মুশফিকুর রহিম। এই জুটি থেকে আসে ৪৩ রান। ইনিংসের ১৫তম ওভারে মোশাররফ রুবেলের বল তুলে মারতে গিয়ে শুভাগত হোমের তালুবন্দি হন নাফিস। বিদায়ের আগে তিনি ৩৫ বলে দুটি চারের সাহায্যে করেন ২৮ রান। একই ওভারে থিসারা পেরেরাকেও ফেরান মোশাররফ। দলীয় ৯১ রানেই পাঁচ উইকেট হারায় বরিশাল।
ইনিংসের ১৬তম ওভারে বিদায় নেন মুশফিক। শফিউলের বলে আরিফুল হকের তালুবন্দি হন মুশফিক। বরিশাল দলপতি আউট হওয়ার আগে করেন ৩৫ রান। তার ২৩ বলের ইনিংসে ছিল চারটি বাউন্ডারি। ১৮তম ওভারে নাদিফ চৌধুরিকে ফেরান কেভিন কুপার। ১৯তম ওভারে ফেরেন ১০ বলে ১৪ রান করা রায়াদ এমরিত। শেষ ওভারে শফিউল বোল্ড করেন রুম্মনকে আর তাইজুলকেও ফেরান তিনি। ১৯.৩ ওভারে বরিশালের ইনিংস থামে ১২৯ রানে।
আগের ম্যাচেই খুলনা শক্তিশালী ঢাকা ডায়নামাইটসকে ৯ রানে হারায়। অপরদিকে, বরিশাল নিজেদের শেষ ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে হেরে মাঠে নেমেছিল। এই জয়ের পর এখন পর্যন্ত পয়েন্ট টেবিলে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের খুলনার অবস্থান শীর্ষে। ছয় ম্যাচে পাঁচ জয় ও এক হারে দলটির সংগ্রহ দশ পয়েন্ট। সমান ম্যাচে তিন জয় ও দুই হারে মুশফিকুর রহিমের বরিশাল ছয় পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে। চার নম্বরে থাকলো মুশফিকের দলটি।