মোঃ জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহঃ হিন্দুদের দুর্গা পুজাঁয় জেলা ব্যাপী আনসার নিয়োগে জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মাঝে তোলপাড় শুরু হয়েছে। পুঁজামন্ডপগুলোতে দেওয়া কমান্ড সার্টিফিকেট (সিসি) অনুযায়ী ৩১৮ জন আনসার সদস্যদের ডিউটি দেখিয়ে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পুজার ডিউটি নিতে প্রতি আনসার সদস্যদের কাছ থেকে ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা করে আদায় করা হয়েছে। এ নিয়ে জেলা প্রশসকের কাছে ১৩ জন বঞ্চিত আনসার লিখিত অভিযোগ করেছেন। পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে সরেজমিন তদন্ত করে কমান্ড সার্টিফিকেট (সিসি) প্রদানের সাথে ডিউটিরত আনসারদের সংখ্যার গরমিল পরিলক্ষিত হয়েছে। সরকারের একটি বিশেষ বিভাগের দেওয়া তথ্যমতে ঝিনাইদহ জেলায় সদ্য সমাপ্ত দুর্গাপুজার সাখ্যা ছিল ৪০২টি। নির্দেশনা অনুযায়ী ৪০২পি পুজা মন্ডপে ২৩০২ জন অঙ্গীভুত আনসার মোতায়েনের কথা ছিল। কিন্তু থানা থেকে প্রেরিত কমান্ড সার্টিফিকেট অনুযায়ী সারা জেলায় ৩১৮ জন আনসার গরহাজির ছিল। প্রাপ্ত তথ্যমতে এবার দুর্গা পুজাঁয় আনসার সদস্যদের পাঁচ দিনের ডিউটি করার পর পিসি ১৭৯০ টাকা ও সাধারণ আনসার ১৫৯০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। সে হিসেব মতে ৩১৮ জন আনসারের কমান্ড সার্টিফিকেট দিয়েও তাদের ডিউটি করানো হয়নি। ফলে তাদের অনুকুলে বরাদ্দ ৫ লাখ ৫৬ হাজার ২০ টাকা উত্তোলন করে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া একই আনসারকে একাধিক পুঁজামন্ডপে ডিউটি দেখানো হয়েছে বলে পুলিশের সরেজমিন তদন্তে এই ঘাপলাবাজী ধরা পড়েছে। এদিকে দুর্গাপুজার আগে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হরিশংকরপুর, পদ্মাকর, দোগাছী ও পোড়াহাটী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ১৮ জন আনসার সদস্য জেলা কমানডেন্ট আহসান উল্লাহর বিরুদ্ধে ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ করেন। লিখিত অভিযোগ তারা উল্লেখ করেন টাকা না দেওয়ায় তাদের পুজোর ডিউটি দেওয়া হয়নি। শৈলকুপা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সোবাহান অভিযোগ করেন, তার উপজেলায় আনসার প্রতি ৭০০ টাকা করে ঘুষ নেওয়া হয়েছে। হরিণাকুন্ডু, কোটচাঁদপুর, কালীগঞ্জ, মহেশপুর ও ঝিনাইদহ সদর উপজেলায়ও এ ভাবে টাকা আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ। পোড়াহাটী ইউনিয়নের ঘোড়ামারা গ্রামের শামছুল আলম অবিযোগ করেন মাথা প্রতি ৩০০ টাকা করে ঘুষ দিতে পারেনি বলে আমাদের পুজোর ডিউটি দেওয়া হয়নি। তার অভিযোগ উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে জেলা কমানডেন্ট আহসান উল্লাহ এই অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত। সাধারণ আনসারদের অভিযোগ মৌলিক প্রশিক্ষন, কম্পিউটার ট্রেনিং, পোষ্টিং ও আনসার অঙ্গীভুত করার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আনসারদের দুর্গাপুজার ডিউটির গরমিল নিয়ে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ জানান, সিসি অনুযায়ী আমরা আনসারদের ডিউটিতে গরমিল পেয়েছি। তাছাড়া একই আনসারকে কমান্ড সার্টিফিকেট অনুযায়ী একাধিক পুঁজামন্ডপে ডিউটি দেখানো হয়েছে। এ ব্যপারে জেলা কমানডেন্ট আহসান উল্লাহ বলেন, স্মার্ট কার্ড ছাড়া আমরা পুজোয় কোন আনসারকে ডিউটিতে দেয়নি। যারা বঞ্চিত হয়েছে, তারাই এক শ্রেনীর জন্রতিনিধিদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এই অভিযোগ করেছে। তাছাড়া ইউনিয়ন পর্যায়ের কমান্ডাররা টাকা নিলে আমার করার কিছুই নেই। করণ তারা বেতন পায় না। সিসি অনুযায়ী ডিউটি না করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঝুকিপুর্ণ মন্ডপগুলোতে পুলিশ বেশি আনসার চেয়েছিল। কিন্তু সে মোতাবেক সরবরাহ করতে পারেনি। আর সেটাই হয়তো গরমিল বলে চালানো হচ্ছে।