পারমাণবিক কর্মসূচি অব্যাহত রাখায় কমিউনিস্ট রাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে নতুন করে আরো কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে পাস করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রগুলো।
পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা বন্ধে চির বৈরী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আনা কঠোর এ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাবের সায় দিয়েছে উত্তর কোরিয়ার অন্যতম প্রধান দুই মিত্র শক্তি চীন ও রাশিয়াও। নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাবটি ১৫-০ ভোটে পাস হয়।
এর আগেও উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ আলাদাভাবে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কিন্তু তাতে করে দেশটিকে পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা-নিরীক্ষা থেকে বিরত রাখা যায়নি; বরং দেশটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো স্থানে আঘাত হানতে সক্ষম এমন ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়ে কোরীয় উপদ্বীপে নতুন করে উত্তজনা তৈরি করেছে।
ফলে এবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের দশম এ নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাবে দেশটির মানুষের প্রতিদিনকার জীবনযাপনের গুরুত্বপূর্ণ উপদানকে (লাইফলাইন) টার্গেট করা হয়েছে।
প্রস্তাবে দেশটির প্রায় ৯০ শতাংশ পেট্রোলিয়াম আমদানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। উত্তর কোরিয়া বেশিরভাগ পেট্রোলিয়াম আমদানি করে প্রতিবেশী ও ঘনিষ্ঠ মিত্র রাষ্ট্র চীনের কাছ থেকে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর আগে ২০১৬ সালেও পেট্রোলিয়াম আমদানি বন্ধের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। সেবার এর আওতায় ছিল ৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন ব্যারেল পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম। এবার সেটি বেড়ে দাঁড়াল পাঁচ লাখ ব্যারেলে। আর অপরিশোধিত তেলের ক্ষেত্রে পরিমাণটি বছরে চার মিলিয়ন ব্যারেল।
এবারের নিষেধাজ্ঞায় বিভিন্ন দেশে কর্মরত উত্তর কোরিয়ার নাগরিকদের আগামী ২৪ মাসের মধ্যে ফেরত পাঠাতে বলা হয়েছে। প্রবাসী আয় দেশটির অর্থনীতির অন্যতম উপাদান। একই সঙ্গে ইলেকট্রনিকস সামগ্রী রপ্তানির ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পোশাকের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি নিকি হ্যালে বলেন, ‘আবারও সীমা লঙ্ঘন করলে উত্তর কোরিয়া আরো কঠিন শাস্তির মুখে পড়বে, এটাই এই সর্বসম্মত প্রস্তাবের বার্তা।’
কিন্তু এত কিছুর পরও পিয়ংইয়ংকে তাদের পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা থেকে বিরত রাখা যাবে কি না, সে প্রশ্নও উঠেছিল শুক্রবারের বৈঠকে।