সুদক্ষ অভিনয় এবং বাহ্যিক সৌন্দর্য, এই দুয়ের মিশ্রণ ঘটিয়ে বহুকাল ধরেই বিশ্বের অগণিত মানুষের হৃদয়ের চিরস্থায়ী আসনটি দখল করে আছেন বলিউড অভিনেত্রী শিল্পা শেঠী। বলিউডে যাত্রা শুরু করার পর থেকে আজ অবধি অল্প যে কজন নায়িকা তাদের যাত্রা শুরুর সময়কার জনপ্রিয়তাকে ছাপিয়ে নিজেকে নিয়ে গেছেন অন্য এক উচ্চতায় তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন অনেকের মতে রঙিন সিনেমা যুগের অভিনেত্রী এবং বলিউডের মুকুটহীন সম্রাজ্ঞী শিল্পা শেঠী। ১৯৭৫ সালে ভারতের কর্ণাটকে জন্মগ্রহণ করা এই অভিনেত্রী গ্ল্যামার জগতে যাত্রা শুরু করেন ১৯৯১ সালে। তত্কালীন ষোড়শী শিল্পা একটি কোমল পানীয় কোম্পানির বিজ্ঞাপনের মডেল হওয়ার মাধ্যমে তার যাত্রা শুরু করেছিলেন। ১৯৯৩ সালে শাহরুখ খানের অভিনয় জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে খ্যাত বাজিগর সিনেমায় সীমা চোপড়া নামক একটি পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে রুপালি পর্দায় যাত্রা শুরু করেন আকর্ষণীয় এই অভিনেত্রী। ৬০-৬২ কেজি এবং ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারিণী শিল্পা বাজিগর সিনেমায় অল্প কিছু মানুষের কাছে অপ্রিয় হলেও অগণিত মানুষের হূদয় ঠিকই জয় করে নিয়েছিলেন তার সুদক্ষ অভিনয় দিয়ে, সঙ্গে তার অত্যাকর্ষণীয় সৌন্দর্য তো ছিলই। আজও সেই পুরনো এবং আকর্ষণীয়া শিল্পার প্রতিনিয়তই নিজেকে ছাপিয়ে যাওয়ার পেছনে অন্যতম প্রধান রহস্য হচ্ছে শরীরচর্চার কঠোর অনুশীলন এবং পরিমিত পরিমাণে সঠিক খাদ্যগ্রহণ। শত কর্মব্যস্ততার মাঝে শিল্পা ঠিকই তার শরীরচর্চার জন্য প্রয়োজনীয় সময় বের করে নেন। বর্তমানে তিনি নিয়মিতই ইয়োগা অনুশীলন করে থাকেন। যথাসম্ভব দীর্ঘসময় ধরে ইয়োগার অনুশীলনের পর তিনি ভারোত্তোলনের অনুশীলন করেন। তার মতে, এই অনুশীলন বাড়ন্ত বয়সের সঙ্গে একজন মানুষের কর্মক্ষমতা ধরে রাখার জন্য অতীব জরুরি। এই দুটি অনুশীলন ছাড়াও সাইক্লিং, সাঁতার কাটা, নিয়মিত জিমে গিয়ে শরীরচর্চার বিভিন্ন প্রকারের অনুশীলনও যথাসম্ভব সময় নিয়ে করে থাকেন তিনি। কঠোর শরীরচর্চার অনুশীলন ছাড়াও জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা এই অভিনেত্রীর আকর্ষণীয় এবং আবেদনপূর্ণ শারীরিক গঠনের অন্যতম প্রধান নিয়ামক হচ্ছে সুনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস। চলুন এবার জেনে আসি নন্দিত এবং মোহনীয় এই রমণীর পরিমিত খাদ্যাভ্যাসের তালিকা।
বন্ধুমহলে এবং আপনজনদের কাছে পেটুক হিসেবে বেশ সুনাম রয়েছে শিল্পা শেঠীর। পাঠক, কথাটি আপনার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হলেও এটিই সত্যি এবং শিল্পা নিজেই স্বীকার করেছেন তা। তবে সর্বদাই সঠিক খাবারটি সঠিক সময়ে ও সঠিক পরিমাণে গ্রহণ করে থাকেন শিল্পা। তার প্রাত্যহিক খাদ্যাভ্যাসের তালিকায় রয়েছে-
সকালের নাশতা : শিল্পার প্রতিটি সকাল শুরু হয় এলোভেরার (এক ধরনের ছোট গাছ) জুস গ্রহণের মাধ্যমে। তার মতে, এটি চামড়া এবং পরিপাকের অনেক উপকারী। এরপর হালকা পরিমাণে পরিজ (যবের তৈরি মণ্ড) এবং ব্রাউন সুগার মিশ্রিত চা পান করার মাধ্যমে সকালের নাশতার পাট সম্পন্ন করেন তিনি।
দুপুরের খাবার : উচ্চমাত্রায় আঁশযুক্ত বিভিন্ন প্রকারের শস্যকণা থেকে প্রস্তুতকৃত বাদামি ভাত বা রুটির সঙ্গে মুরগির তরকারি এবং যেকোনো একটি সবজিসহকারে দুপুরের খাবার সম্পন্ন করে থাকেন শিল্পা শেঠী।
বিকেলের নাশতা : এই সময় ক্ষুধার্ত হয়ে গেলে তিনি একটি বাদামি রুটির টোস্ট সঙ্গে দুটি সিদ্ধ ডিমের সাদা অংশ এবং চা খেতেই অধিক পছন্দ করেন।
রাতের খাবার : অধিক দেরিতে রাতের খাবার গ্রহণ শিল্পার ধাতে নেই, যথাসম্ভব দ্রুত কাজটি সম্পন্ন করে থাকেন তিনি। শিল্পার রাতের খাবারের তালিকায় থাকে সালাদ, সুপ এবং মুরগির মাংস।
কেক, কুলফি জাতীয় খাবার থেকে সর্বদাই যথাসম্ভব দূরে থাকেন শিল্পা। তার মতে, নিজের ভালোমন্দ বোঝার ক্ষমতা আমাদের সকলেরই রয়েছে। আমরা যদি নিয়মিত শরীরচর্চার অনুশীলনের সঙ্গে সঠিক সময়ে আমাদের খাদ্য সঠিক পরিমাণে গ্রহণ করে থাকি তাহলে সুস্থ এবং আকর্ষণীয় শারীরিক গঠনের অধিকারী হওয়া আমাদের সকলের পক্ষেই সম্ভব।
হালনাগাদ: ০২:৪২ pm ৩১-১২-২০১৬