ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হককে আবারও সেন্ট্রাল লন্ডনের ইউস্টনের ইউনিভারসিটি কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। আনিসুল হকের ছেলে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘বাবাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। তিনি ইনফেকশনে আক্রান্ত।’
হাসপাতাল সূত্র জানায়, মেয়র আনিসুল হক সেরিব্রাল ভাসকুলাইটিসে (মস্তিষ্কের রক্তনালির এক ধরনের প্রদাহ) আক্রান্ত হয়েছিলেন। এ রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত মেডিসিনের প্রভাবে তার শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণেই তিনি ইনফেকশনে আক্রান্ত হন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ফের তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়।
মঙ্গলবার লন্ডন সময় রাত সাড়ে নয়টায় যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘আমরা যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সার্বক্ষনিক আনিসুল হকের খোঁজ-খবর নিচ্ছি। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে কথা বলার এখতিয়ার তার পরিবার, চিকিৎসক ও হাইকমিশনের।’
এছাড়া লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার খোন্দকার এম তালহা জানান, মেয়র আনিসুল হকের শারীরিক অবস্থার আপডেট পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হবে। মেয়রের পরিবারের পক্ষ থেকে তার সুস্থতা কামনায় সবার দোয়া চাওয়া হয়েছে।
এর আগে, গত ২৯ জুলাই ব্যক্তিগত সফরে সপরিবারে লন্ডনে যান ডিএনসিসি মেয়র আনিসুল হক। গত ৪ আগস্ট তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানান, তিনি সেরিব্রাল ভাসকুলাইটিসে (মস্তিষ্কের রক্তনালীর প্রদাহ) আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এর কোনও কারণ তারা নির্ণয় করতে পারেননি।
আইসিইউতে থাকা অবস্থায় মেয়রের সহকারী একান্ত সচিব মিজানুর রহমান জানিয়েছিলেন, তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল এবং তাকে স্বাভাবিকভাবে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন চিকিৎসকরা। পরে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে গত ৩১ অক্টোবর তাকে আইসিইউ থেকে ফিজিওথেরাপি দেওয়ার জন্য রিহ্যাবে নেওয়া হয়। ওই সময় চিকিৎসকরা জানান, মেয়র শঙ্কামুক্ত রয়েছেন।
এর একমাস পূর্ণ হওয়ার আগেই তাকে ফের আইসিইউতে নেওয়া হলো।
আনিসুল হকের পরিবারসূত্রে জানা গেছে, তিনি আগে থেকেই কিছুটা অসুস্থ ছিলেন। দেশে চিকিৎসকরা তার শারীরিক সমস্যা শনাক্ত করতে পারেননি। লন্ডনে ব্যক্তিগত সফর শেষে গত ১৪ আগস্ট তার দেশে ফেরার কথা ছিল।
৬৫ বছর বয়সী আনিসুল হক টেলিভিশনে অনুষ্ঠান উপস্থাপনার মাধ্যমে জনপ্রিয়তা পান। তৈরি পোশাক খাতের এই ব্যবসায়ী একসময় এই খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সভাপতি ছিলেন। সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তিনি ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআই’র সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন। ২০১৫ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন তিনি।