শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ৭ই বৈশাখ ১৪৩১
Smoking
 
ডলারের দাম বাড়ায় উদ্বিগ্ন সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক
প্রকাশ: ১২:২০ pm ২৯-০৪-২০১৭ হালনাগাদ: ১২:২৮ pm ২৯-০৪-২০১৭
 
 
 


স্বাভাবিকভাবেই আন্তঃব্যাংক লেনদেনের চেয়ে খোলা বাজারে বেশি মূল্যে ডলার বিক্রি হয়ে থাকে। সে তুলনায় আমদানিতে ডলারের দর কিছু বাড়তি থাকে। কিন্তু অনেকটা হঠাত্ করেই প্রতি ডলারের দর তিন-চার টাকা বেড়ে ৮৪ টাকা অতিক্রম করে। রজমান মাসের আগে ডলারের দর বাড়ায় আমদানি পণ্যের যে মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, তাতে উদ্বিগ্ন সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক।  এ পরিপ্রেক্ষিতে, গতকাল বিকেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অনুষ্ঠিত ব্যাংকার্স সভায় দর স্থিতিশীল রাখতে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কৃত্রিমভাবে ডলারের দাম বাড়ালে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে, গতকাল সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, রমজানের আগে ডলারে দাম বাড়া ভালো লক্ষণ নয়। এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। মে মাসে রোজা শুরু হবে। তার মধ্যেই হঠাত্ ডলারের মূল্য বেড়ে গেল। তিনি জানান, গত দু’দিন এটা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে আলোচনা করেছি। ইতোমধ্যে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন তিনি। বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের ৩২ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ আছে। সেখান থেকে ২০০ বা ৪০০ মিলিয়ন ডলার ব্যাংকে দিলে আমাদের বিশেষ ক্ষতি নেই।  ব্যাংকার্স সভা সূত্রে জানা গেছে, আমদানি পর্যায়ে ডলার ৮২ টাকায় রাখতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এজন্য আন্তঃব্যাংক ডলার দরের সঙ্গে দুুই টাকার বেশি না নেওয়ার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে বলে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বাড়তি চাহিদাকে কেন্দ্র করে কোনো ব্যাংক কৃত্রিম উপায়ে ডলারের দাম বাড়ালে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি বলে দেওয়া হয়েছে। হঠাত্ করে ডলারের দর বাড়তে থাকায় বুধবার ব্যাংকগুলোকে টেলিফোন করে একই বিষয়ে সতর্ক করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীরা ছাড়াও ডেপুটি গভর্নরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে ডলারের দর, সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হাওরবাসীর পাশে দাঁড়ানোর বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়। বৈঠকে বলা হয়, দেশে এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি যে হঠাত্ করে এভাবে ডলারের দর বাড়াতে হবে। আর রমজানকে সামনে রেখে ডলারের দাম এভাবে বাড়ালে ব্যবসায়ীরা পণ্যমূল্য অনেক বাড়িয়ে দেবেন। এ কারণে আমদানি পর্যায়ে কোনো অবস্থাতে আন্তঃব্যাংক ডলার দরের সঙ্গে দুই টাকার বেশি হতে পারবে না। আন্তঃব্যাংকে গতকাল ডলারের দর ছিল ৮০ টাকা ১৩ পয়সা। এতে করে আমদানি পর্যায়ে একটি ব্যাংক সর্বোচ্চ ৮২ টাকা ১৩ পয়সা নিতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংক চায় ডলারের দর ৮২ টাকার আশপাশে থাকুক। এছাড়া পণ্য আমদানিতে কোনো ব্যাংকের ডলারের প্রয়োজন হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা সরাবরাহ করার আশ্বাস দিয়েছে। ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে ডলারের দাম কমানো ও হাওরে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সিএসআর প্রদানের ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি ব্যাংকের অস্বাভাবিক হারে ঋণ বিতরণ বেড়ে গেছে। ঋণের মান যাচাইয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া খেলাপির ঋণ কমাতে বলা হয়েছে। ঋণ আদায় না করে শুধু পুনঃতফসিল করা যাবে না। এবিবির চেয়ারম্যান আনিস এ খান বলেন, ডলারের দাম কমাতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে আন্তঃব্যাংক ডলারের গড় দরের সঙ্গে আমদানিতে দুই টাকার বেশি নিতে বারণ করা হয়েছে। ডলারের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আগামী রোববার আরও একটি বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। এছাড়া সিআইবিসহ সার্বিকভাবে ব্যাংকিংয়ের রীতিনীতি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT